গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
লাদাখের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে ভারত-চিন দ্বন্দ্ব চিরকালীন। এমন স্পর্শকাতর এলাকাকেই চিনের অংশ হিসেবে দেখিয়ে বিপাকে পড়েছিল টুইটার। বুধবার যৌথ সংসদীয় কমিটির সামনে হাজিরা দিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার পরেও পার পাচ্ছে না এই মাইক্রোব্লগিং সাইট। টুইটারের ভারতীয় কর্তাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন সাংসদরা। কমিটির চেয়ারম্যান মীনাক্ষী লেখি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়ছেন, টুইটারের এই সাফাই ‘যথেষ্ট নয়’। এটা ‘ফৌজদারি অপরাধ’ বলেও মন্তব্য করেন লেখি।
কয়েক মাস আগে ভারতের অংশ জুড়ে নেপালের নতুন ম্যাপ প্রকাশ ঘিরে নয়াদিল্লি-কাঠমান্ডু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উত্তেজনা বেড়েছিল। অন্য দিকে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মে মাস থেকে চলছে ভারত-চিন সীমান্ত সঙ্ঘাত। ১৫ জুন গালওয়ানে দু’দেশের সেনার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ পর্যন্ত হয়েছে। সেই দ্বন্দ্ব এখনও মেটেনি। তার মধ্যেই সম্প্রতি লাদাখের লেহ্-তে গিয়ে টুইটারে একটি ছবিতে জিয়ো লোকেশন ট্যাগ করেন এক সংবাদ মাধ্যমের কর্মী। সেখান থেকেই সূত্রপাত যাবতীয় বিতর্কের। কারণ, ওই জিয়ো লোকেশনেই লেহ্কে চিনের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছিল।
তার জেরে টুইটারের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে সরকার। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘‘ভারতের সংবিধান অনুযায়ী লাদাখ ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’’ কড়া ভাষায় এই বার্তা দেওয়া হয় টুইটারের সিইও জ্যাক ডোরসেকেও। পাশাপাশি তাঁকে যৌথ সংসদীয় কমিটির সামনে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক উড়ানে বিধিনিষেধের মেয়াদ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়াল ডিজিসিএ
বুধবার কমিটির সামনে হাজিরা দিয়ে টুইটারের ভারতীয় কর্তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা সন্তুষ্ট করতে পারেনি কমিটিকে। বরং উষ্মা কার্যত বেড়েছে। লেখি বলেন, ‘‘লাদাখকে চিনের অংশ হিসেবে দেখানো ফৌজদারি অপরাধ, যাতে ৭ বছর কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।’’ বৈঠক সূত্রে খবর, টুইটার কর্তারা কমিটিকে বলেছেন, এ বিষয়ে (লাদাখ) ভারতের স্পর্শকাতরতাকে তাঁরা শ্রদ্ধা করেন তাঁরা। কিন্তু বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘এই ব্যাখ্যা অপর্যাপ্ত। এটা শুধুমাত্র স্পর্শকাতরতার বিষয় নয়। এটা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার বিষয়।’’
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে অম্বালায় আরও তিনটি রাফাল, এপ্রিলে হাসিমারায়
টুইটারের তরফে এক মুখপাত্র বৈঠকের বিষয়ে বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক জিও ট্যাগিং-এর বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে আমাদের কর্মীরা সমাধান করেছেন। আমরা আমাদের কাজের বিষয়ে স্বচ্ছ ও উদার মানসিকতার পক্ষে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় রক্ষা করে চলব আমরা।’’