শেষযাত্রায় শ্রীকান্তকুমার চৌধরি। ছবি: সংগৃহীত।
উত্তরপ্রদেশে আত্মঘাতী হয়েছেন ২২ বছরের এক ‘অগ্নিবীর’। আগরার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে সেন্ট্রি পদে কর্মরত ছিলেন শ্রীকান্তকুমার চৌধরি নামের ওই ‘অগ্নিবীর’। মঙ্গলবার গভীর রাতে নিজের রাইফেল থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ফের অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেছে তৃণমূল।
শনিবার রাজ্যের শাসকদলের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে লেখা হয়, “বিজেপির অপরিকল্পিত অগ্নিপথ প্রকল্পের জন্য আরও একটি প্রাণ চলে গেল। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ২০ জন অগ্নিবীর আত্মহত্যা করেছেন।” তার পরেই আগরার ঘটনাটির উল্লেখ করা হয় ওই পোস্টে। একদম নীচে লেখা হয়, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আপনার হাতে রক্ত লেগে রয়েছে।”
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্ত। ২০২২ সালে তিনি অগ্নিবীর প্রকল্পে বায়ুসেনায় যোগ দেন। কী কারণে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে এক্স হ্যান্ডলের একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ঊর্ধ্বতনেরা হেনস্থা করায় এবং বহু দিন ছুটি না পাওয়ায় অবসাদে ভুগছিলেন ওই ‘অগ্নিবীর’।
সেনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য ২০২২ সালের জুন মাসে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। জানিয়েছিলেন, ওই প্রকল্পে সাড়ে ১৭ থেকে ২৩ বছরের তরুণ-তরুণীরা চার বছরের জন্য চুক্তির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় (স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনা) যোগ দিতে পারবেন। তাঁদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’। মাসে ৩০-৪৫ হাজার টাকা করে পাবেন তাঁরা। সেনায় শূন্যপদ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চতুর্থ বছরের শেষে সেই ব্যাচের সর্বাধিক ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে সেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাকিদের ১১-১২ লক্ষ টাকা হাতে দিয়ে পাঠানো হবে অবসরে। থাকবে না কোনও পেনশন। সেনার স্থায়ী নিয়োগের পদ্ধতি বদলে চুক্তিভিত্তিক করার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভে নামেন চাকরিপ্রার্থী যুবকেরা। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল, পঞ্জাব, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড-সহ দেশের নানা রাজ্যে হিংসাত্মক প্রতিবাদ হয়েছিল। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি প্রথম থেকেই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছে।