প্রতীকী ছবি।
গুজরাতের ভোটে বলিউডি ‘তড়কা’!
সৌজন্যে জিএসটি।
ভোটের ময়দানে ‘শোলে’র ভয়ানক ডাকুর প্রবেশ রাহুল গাঁধীর হাত ধরে ঘটে গিয়েছে আগেই। যখন কংগ্রেস সহ-সভাপতি জিএসটি-র বিরোধিতা করে বলেছিলেন— এটি আসলে ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’। এ বার গব্বরের চিরশত্রু ঠাকুর বলদেব সিংহ পা রাখলেন নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের সুরাতে। যে চরিত্রের অভিনেতা সঞ্জীব কুমার ঘটনাচক্রে সুরাতেরই ভূমিপুত্র। পটেল সম্প্রদায়ের সঞ্জীবের আসল নাম হরিহর জেঠলাল জরিওয়ালা।
সুরাতের বিভিন্ন জায়গায় পড়েছে পোস্টার। কোনওটিতে ঠাকুররূপী সঞ্জীবের মুখ। কোথাও সাদা পাজামা-পাঞ্জাবির উপরে চাদর ঢাকা পূর্ণাবয়ব। পোস্টারের উপরে লেখা, ‘গব্বর ম্যায় আ রাহা হুঁ।’ তার পরে হ্যাশট্যাগ দিয়ে— ‘জিএসটি’। ১৯৭৫-এ বক্স অফিস কাঁপানো ছবিতে ঠাকুরকে বলতে শোনা যায়, ‘রামগড়ওয়ালো নে পাগল কুত্তে কে সামনে রোটি ডালনা বন্ধ কর দিয়া হ্যায়।’ সেই অনুকরণে পোস্টারগুলোতেও লেখা, ‘সুরাতওয়ালো নে পাগল বিকাশ কে সামনে রোটি ডালনা বন্ধ কর দিয়া হ্যায়।’
মোদীর উন্নয়নের স্বপ্ন পাগল হয়ে গিয়েছে বলে খোঁচা দিয়ে কংগ্রেসের ‘বিকাশ গান্ডো থায়ো ছে’ স্লোগান চলছে বহুদিনই। এ বার ‘ঠাকুর-গর্জন’কেও ঠিক ফাঁকা আওয়াজ বলে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, শহরটার নাম সুরাত। গুজরাতে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের মূল ঠিকানা। নোট বাতিল এবং জিএসটি–র জন্য ব্যাপক ক্ষুব্ধ যে ব্যবসায়ীরা রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মোদীকে। পাতিদার আন্দোলনের ভিত্তিভূমিও এই সুরাত। বিপক্ষের এই দুর্বল জায়গায় আঘাত করতেই বুধবার নোটবন্দির বর্ষপূর্তির দিনটা রাহুল কাটিয়েছেন সুরাতে। সপ্তাহখানেক আগে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের এই শহরেই রোড-শো করেছেন সনিয়া-পুত্র। এই পরিস্থিতিতেই পোস্টারে জিএসটি নিয়ে সুরাতের ভূমিপূত্র সঞ্জীব-অভিনীত ঠাকুরের চ্যালেঞ্জ। পোস্টারের নীচে আবার লেখা— ‘দিল সে সুরাতি’। কোনও রাজনৈতিক দলের নাম বা প্রতীক নেই। কিন্তু আক্রমণের অভিমুখ স্পষ্ট। ফলে চাঞ্চল্য তো হবেই!
‘গব্বর’ আমজাদ খান মারা গিয়েছেন ১৯৯২ সালে। সঞ্জীব প্রয়াত আরও আগে। ১৯৮৫ সালে। কিন্তু আজও বলিউডের এই অভিনেতা সুরাতে ব্যাপক জনপ্রিয়। ভূমিপুত্রকে নিয়ে গর্বের শেষ নেই সুরাতিদের। মৃত্যুর এত বছর পরে ভোটমুখী গুজরাতে তাঁর পোস্টার দেখে উল্লসিত বহু সুরাতি। অনেকেই বলছেন, ‘‘ঠাকুর বলদেব সিংহ ফিরে এসেছেন।’’
‘শোলে’-তে ঠাকুরের হাতেই শেষ হয়েছিল ডাকু গব্বরের রাজ্যপাট। ভোট-রাজ্যে ‘ঠাকুর’ কে? ‘গব্বর’ই বা কে? মুচকি হেসেও ভেঙে বলছেন না কেউ। তাতে কী, ফিল্মি এই ভোটযুদ্ধ এখন দারুণ উপভোগ করছেন গুজরাতবাসী। ঠাকুর আর গব্বর আমনে-সামনে বলে কথা!