উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অপসারিত সচিন পাইলট— ফাইল চিত্র।
মাত্র এক লাইনের টুইট-প্রতিক্রিয়া— ‘‘সত্যকে হয়রান করা যায়, হারানো যায় না।’’ রাজস্থানের উপ মুখ্যমন্ত্রিত্ব এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পরে সচিন পাইলট বার্তা দিলেন এবার মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের পাশাপাশি কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ে নামার প্রস্তুতি শুরু করছেন তিনি। সচিন শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার তিনি পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ ঘোষণা করতে পারেন।
সচিনের পাশাপাশি আজ তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই মন্ত্রী বিশ্ববেন্দ্র সিংহ এবং রমেশ মিনাকেও রাজস্থান মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পরিষদীয় দলের বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের সঙ্গে দেখা করে সচিনদের মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তের কথা জানান। রাজ্যপাল সাংবিধানিক বিধি মেনেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে সায় দেন।
কংগ্রেস সভাপতি পদে সচিনের উত্তরসূরি হিসেবে এদিন গহলৌত মন্ত্রিসভার সদস্য গেবিন্দ সিংহ দোটাসরার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। শিকার জেলার লক্ষণগড় কেন্দ্রের তিনবারের বিধায়ক গোবিন্দ পরিষদীয় রাজনীতিতে দক্ষ বলে পরিচিত।
আরও পড়ুন: বৈঠকে গেলেন না সচিন পাইলট, সহযোগী বিধায়কদের নিয়ে ভিডিয়ো প্রকাশ
মঙ্গলবার জয়পুরের কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকেই সচিন এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করিয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। গতকালের মতোই আজও গরহাজির ছিলেন সচিন এবং তাঁর অনুগামীরা। এদিনও তাঁরা দিল্লির অদূরে গুরুগ্রামের রিসর্টে ছিলেন। সচিন শিবিরের দাবি, কংগ্রেসের কোনও শীর্ষ নেতা-নেত্রীর সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়নি।
বৈঠকের পরে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর ‘দূত’ রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা দলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘‘সচিন রাজস্থান সরকার ফেলার চেষ্টা করে চলেছেন। বার বার দলের নেতৃত্বের তরফে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।’’ সচিন ঘনিষ্ঠ প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি মুকেশ ভাকর এবং প্রদেশ সেবাদলের চেয়ারম্যান রাকেশ প্রতীককেও এদিন পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, মন্ত্রিসভা এবং দলীয় পদ থেকে সচিনের অপসারণের পরেই এদিন তাঁর সমর্থনে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এনএসইউআই-এর রাজ্য সভাপতি অভিমন্যু পুনিয়া ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
রাজস্থান কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর, দলের মূল এবং শাখা সংগঠনের আরও কিছু পদাধিকারীও বিদ্রোহী শিবিরে সামিল হতে পারেন। রাজস্থান প্রদেশে কংগ্রেসেই ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সভাপতি সচিন পাইলট। ২০১৪ সালের গোড়া থেকেই ওই পদে ছিলেন তিনি। ফলে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা কম নয়। ফলে আপাতত কোনও রকমে সরকার বাঁচানো গেলেও সচিন দল ছাড়লে সংগঠনে ‘প্রভাব’ পড়বে যথেষ্টই।
আরও পড়ুন: গালওয়ানে নিহতদের অন্ত্যেষ্টিও করেনি চিন! অনুষ্ঠান না করতে চাপ পরিজনদের
গহলৌতের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টি (বিটিপি)। দলের বিধায়ক রাজকুমার রোয়াত আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে অভিযোগ তুলেছেন, জোর করে পুলিশ তাঁকে হোটেলে আটকে রেখেছে। রাজস্থানের বিটিপির দুই বিধায়ক এতদিন গহলৌত সরকারকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু সোমবার রাতে দলের তরফে সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।