প্রতীকী ছবি।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর ‘অপরাধে’ এক মধ্যবয়সি মহিলাকে শাস্তি দিলেন গ্রামবাসীরা। প্রথমে বেধড়ক মারধর করে তার পর তাঁকে প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে করতে বাধ্য করা হল।
ত্রিপুরার খোওয়াই জেলার ঘটনা। গ্রামবাসীদের অত্যাচারে গুরুতর জখম ওই মহিলা ভর্তি হাসপাতালে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মহিলা তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের ওই দলটিতে তাঁর স্বামীও ছিলেন। তবে মহিলাকে যখন জনা ১৫ গ্রামবাসী মারধর শুরু করেন তখন তিনি পালিয়ে যান। এর পরই তাঁকে আবার বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।
খোওয়াইয়ের তেলিমুরা থানার অফিসার ইন চার্জ সুবিমল বর্মন জানিয়েছেন, তদন্তকারীরা মহিলার সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করে তাঁর বয়ান নথিভু্ক্ত করেছেন। ঘটনাটির তদন্তও শুরু হয়েছে।
ওই মহিলার অভিযোগ, শনিবার রাতে তাঁর স্বামীর নেতৃত্বে ১৫ জন গ্রামবাসীর একটি দল তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান একটি ধানজমিতে। সেখানেই মারধর করা হয় তাঁকে। শারীরিক অত্যাচারে অজ্ঞান হয়ে যান ওই মহিলা। অভিযোগ, মহিলার প্রেমিক সন্দেহে গ্রামের এক ব্যক্তিকেও মারধর করেন গ্রামবাসীরা। মারের চোটে জ্ঞান হারান মহিলা। জ্ঞান ফিরলে দু’জনের মালাবদল করানো হয়। পুরুষ সঙ্গীকে বাধ্য করা হয় মহিলার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিতে। ঘটনাটির একটি ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ত্রিপুরার মহিলা কমিশন ঘটনাটির নিন্দা করেছে। কমিশনের প্রধান বর্ণালী গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘‘সভ্য জগতে এ ভাবে এক জন মহিলার উপর অত্যাচার এবং জোর করে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’’ কমিশনের তরফে ওই মহিলার কাছে একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর কথাও জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ ওই মহিলার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা ওই মহিলাকে মারধর করেছেন। একইসঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, স্ত্রীকে তিনিই এর পর হাসপাতালে নিয়ে যান। সারা রাত তাঁর চিকিৎসা চলাকালীন সেখানে থাকেনও। তবে স্ত্রী-র সঙ্গে যা করা হয়েছে সে ব্যাপারে কোনওরকম দুঃখ প্রকাশ করতে শোনা যায়নি ওই মহিলার স্বামীকে।