দক্ষিণের মঞ্চে মধ্যমণি মানিক

বাঘলিঙ্গমপল্লির ‘কল্যাণ মণ্ডপম’ প্রেক্ষাগৃহের যে মঞ্চে কাল, বুধবার থেকে সিপিএমের ২২তম পার্টি কংগ্রেস শুরু হচ্ছে, তার নামকরণে সুকোমল সেনের সঙ্গেই বেছে নেওয়া হয়েছে ত্রিপুরার প্রয়াত নেতা খগেন দাশকে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:০৩
Share:

মানিক সরকার। ফাইল চিত্র।

ত্রিপুরায় ২৫ বছরের রাজ্যপাট খুইয়ে এসেছেন। কিন্তু দক্ষিণে দলের মহামঞ্চে তিনিই মধ্যমণি! অন্তত গোড়ার পর্বে।

Advertisement

বাঘলিঙ্গমপল্লির ‘কল্যাণ মণ্ডপম’ প্রেক্ষাগৃহের যে মঞ্চে কাল, বুধবার থেকে সিপিএমের ২২তম পার্টি কংগ্রেস শুরু হচ্ছে, তার নামকরণে সুকোমল সেনের সঙ্গেই বেছে নেওয়া হয়েছে ত্রিপুরার প্রয়াত নেতা খগেন দাশকে। আর সেই মঞ্চে পার্টি কংগ্রেসের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করার ভার দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে। পার্টি কংগ্রেস শুরুর আগে রেওয়াজ মেনে আজ হায়দরাবাদের এম বাসবপুন্নাইয়া ভবনে বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির যে শেষ বৈঠক হয়ে গেল, সেখানেও সভাপতি মানিকবাবু। সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কাল যথারীতি উদ্বোধনী বক্তৃতা করবেন। অন্যান্য বাম দলের নেতৃত্বের সৌভ্রাতৃত্বের বার্তার পরে শেষ বক্তা মানিকবাবুই। আগরতলা থেকে হিন্দি ও ইংরেজিতে শান দিয়েই এসেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আর এ সবের আগে রক্তপতাকা উত্তোলনে দেখা যাবে সেই তেলঙ্গানা কৃষক আন্দোলনের মুখ, প্রবীণা মল্লু স্বরাজমকে।

শেষ মুহূর্তে চমক এনে এ বারের পার্টি কংগ্রেস থেকে ইয়েচুরির পরিবর্তে মানিকবাবুকে সাধারণ সম্পাদক করার ভাবনা রয়েছে প্রকাশ কারাট শিবিরের। উদ্বোধনী আসরে ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতাকে গুরুত্ব দেওয়া সেই বৃহত্তর পরিকল্পনারই আভাস কি না, জল্পনা শুরু হয়েছে দলে! বিদায়ী পলিটব্যুরোর এক সদস্য অবশ্য বলছেন, ‘‘এখন আমাদের মূল আহ্বান, বিজেপিকে পরাস্ত করো। ত্রিপুরায় সেই বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়়াই হয়েছে এবং হচ্ছে। তাই সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ হায়দরাবাদ পৌঁছে ইয়েচুরিও ফের বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপিকে ঠেকানোই মূল লক্ষ্য। অন্য দিকে, কারাট শিবির নেমে পড়়েছে ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের সওয়ালে ফাঁক-ফোকর খুঁজে বার করতে! হাবিব দু’দিন আগেই বলেছেন, বিজেপিকে ঠেকাতে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ঐক্য জরুরি। সেটা করতে না পারলে বামেরা ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে বিভাজনের দায়ে অভিযুক্ত হবে।

Advertisement

তিরুঅনন্তপুরম থেকে হায়দরাবাদ রওনা দেওয়ার সময়ে কেরলের প্রবীণ নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন মুখ খুলেছেন হাবিবের সুরেই। বলেছেন, ‘‘ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক জোট গড়়ার জন্যই এই পার্টি কংগ্রেস হওয়া উচিত।’’ সিপিএমের সঙ্গে সম্পর্ক চুকে গেলেও বাংলার প্রাক্তন সাংসদ অনিল বসুর আরও চাঁছাছোলা মন্তব্য, ‘‘সব প্রতিনিধিদের আহ্বান করছি, প্রকাশ কারাটের তত্ত্বকে বিপুল ভাবে পরাস্ত করুন! নইলে সিআইএ-র কথা শুনে এরা দলটা তুলে দেবে!’’

পার্টি কংগ্রেসের ৭৮০ জন প্রতিনিধির সিংহভাগ কার কথা শুনবেন, তাঁরাই জানেন! আর হায়দরাবাদ শহর জুড়়ে প্রচার এবং তেলঙ্গানা রাজ্য কমিটির আয়োজন দেখে অবশ্য বোঝার উপায় নেই যে, লোকে বলে সিপিএম উঠে গিয়েছে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement