ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর জামিন নাকচ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। কিন্তু এখনও ত্রিপুরার প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী বাদল চৌধুরীর কোন হদিস পেল না পুলিশ। ইতিমধ্যে ত্রিপুরা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রিতে তাঁর আগাম জামিনের জন্যে আবেদন করা হয়েছে। এখন হাইকোর্টের পুজোর ছুটি চলছে। অবকাশকালীন বিচারপতি অরিন্দম লোধের আদালতে আগামী ২১ অক্টোবর দুপুরে আবেদনের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন বাদলবাবুর আইনজীবী পুরুষোত্তম রায়বর্মন।
গত ১৬ তারিখ রাতে বাদলবাবুর জামিন নাকচের পর থেকে পুলিশি অভিযান চলছে। পুলিশে ভরসা না করে বিজেপি সমর্থকরাও বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি শুরু করেছে। আজ খবর ছড়ায়, বাদলবাবু অসুস্থ। তিনি চিকিৎসকের কাছে যাবেন। তার জন্যে এ দিন বিকেল থেকে আগরতলার বিভিন্ন চিকিৎসকের চেম্বারে এবং নার্সিংহোমের সামনে পুলিশি নজরদারি শুরু হয়েছে। সন্ধ্যায় পুলিশ আগরতলার শংকর চৌমহনিতে এক চিকিৎসকের চেম্বারে হানাও দেয়। সঙ্গে ছিল বাদলের সাসপেন্ড হওয়া এক দেহরক্ষী। প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ কি তবে বাদলবাবুকে চেনেন না?
এ দিকে, বাদলবাবুকে খুঁজে না পাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে রাজ্য গোয়েন্দাদের টানাপড়েন শুরু হয়েছে। পুলিশের ব্যর্থতার জন্য গোয়েন্দা বিভাগকেই দায়ী করছে পুলিশেরই একটি মহল। তাদের বক্তব্য, সোমবার অন্তর্বর্তী জামিন পেয়ে বাদলবাবু বেল বন্ড জমা দিতে থানায় যান। তার পর তিনি কোথায় গেলেন, তা গোয়েন্দারা কেন নজরে রাখল না!
পুলিশের ব্যর্থতার জন্য সরকার কাল পুলিশ প্রশাসনে কিছু রদবদল করে। আজ সেই বদলি ও সাসপেন্ডের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্যে রাজ্যের আইপিএস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। ডিজিপি অখিল কুমার শুক্লর নেতৃত্বে প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। এক পুলিশ কর্তা বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রধান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। তাই তাঁর কাছেই আবেদন জানিয়েছি।’’ তবে পুলিশের উপর সরকার এখনও খড়্গহস্ত। আজ রাতে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাদল চৌধুরীর তিন দেহ রক্ষীকে সাসপেন্ডের কারণ, তাদের হেফাজত থেকেই তিনি পালিয়ে গিয়েছেন। আজ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)-এর তিন কনেস্টবলকে বাদলবাবুর উপরে পর্যাপ্ত নজরদারি না করার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। পশ্চিম থানার আধিকারিক দেবপ্রসাদ রায়কে কর্তব্যে অবহেলার জন্য সাসপেন্ড করে সুব্রত চক্রবর্তীকে পশ্চিম থানার ওসি করা হয়েছে।