বাদলের খোঁজে আগরতলায় সিপিএম দফতরে পুলিশি অভিযান। বুধবার রাতে। —নিজস্ব চিত্র
বাম আমলে পূর্ত দফতরের দুর্নীতির মামলায় গত কাল মধ্য রাতে ত্রিপুরার প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী বাদল চৌধুরীর জামিনের আবেদন খারিজ করেছে পশ্চিম জেলা দায়রা আদালত। তার পর থেকেই রাজ্য বিধানসভায় সিপিএমের উপ দলনেতাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে ত্রিপুরা পুলিশ। কাল রাত বারোটা থেকে আজ ভোর চারটে পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় এক যোগে তল্লাশি চালানো হয়। যাতে শামিল হয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি স্বয়ং। দু’দফায় হানা দেওয়া হয় সিপিএম রাজ্য দফতরে।
বাদলবাবুর হদিস না মিললেও আজ সকালে গ্রেফতার করা হয় সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নারায়ণ করকে। তাঁর বিরুদ্ধে বাদলবাবুকে পালাতে সাহায্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে আদালত থেকে তিনি অবশ্য জামিন পান। এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, ‘‘বিজেপি ষড়যন্ত্র করছে। এর শেষ দেখেই ছাড়ব।’’
দুর্নীতি মামলায় বাদলবাবুর অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ শেষ হয় গত কাল। সে দিনই তাঁর আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল দায়রা জজ সব্যসাচী দত্ত পুরকায়স্থের এজলাসে। বিকেল নাগাদ সওয়াল-জবাব শেষ হয়ে গেলেও লিখিত রায় আসে প্রায় আট ঘণ্টা পরে, রাত ১১টা ৪০ মিনিটে। রায় আসার পরেই পুলিশ সিপিএম রাজ্য সদর দফতরে হানা দেয়। পরে সিপিএমের মুখপত্রের অফিস, বিধায়কদের সরকারি আবাস এমনকি বাদলবাবুর ঘনিষ্ঠদের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় তারা।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাসের অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই বিজেপি সরকার এই সব করছে।’’ তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাদলবাবু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন কিনা তা সম্পাদকমণ্ডলীর কাছে জানতে চেয়েছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, আইনজীবীদের পরামর্শমতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ দিন কলকাতায় সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক ও আইনি পথে আমরা ত্রিপুরায় এই স্বৈরাচারী আক্রমণের মোকাবিলা করব।’’
বাদলের খোঁজে মরিয়া পুলিশ ছাড় দিচ্ছে না সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকেও। পুলিশ সাংবাদিকদের বাড়ি যাচ্ছে। যাঁরা বাদলকে নিয়ে খবর করছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জানতে চাইছে, ওই সব সাংবাদিক আদৌ বাদল সম্পর্কে কোনও তথ্য জানেন কি না।
এ দিকে, ডিআইজি অরিন্দম নাথকে আজ পুলিশের মুখ্য কার্যালয়ে বদলি করেছে রাজ্য সরকার। পশ্চিম ত্রিপুরার এসপি অজিতপ্রতাপ সিংহকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বাদলবাবুর মামলার তদন্তকারী অফিসারও পরিবর্তন করা হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রীর দেহরক্ষীদের।