আগরতলা-সহ ত্রিপুরার ১৩টি পুর এলাকার ২২২টি আসনে ভোট ছিল বৃহস্পতিবার। ছবি: ফেসবুক।
ভোট মিটতেই আগরতলায় নতুন করে নির্বাচনের দাবি তুলল রাজ্য সিপিএম। সিপিএমের দাবি, আগরতলার প্রতিটি ওয়ার্ডে নতুন করে ভোটগ্রহণ করতে হবে। তাদের অভিযোগ, ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে ত্রিপুরায়। আর তাতে মদত দিয়েছে রাজ্যের বিজেপিশাসিত সরকার।
বৃহস্পতিবার পুরভোট ছিল ত্রিপুরায়। সিপিএমের অভিযোগ, নিয়ম থাকা সত্ত্বেও তাদের দলের পোলিং এজেন্টদের বুথে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি, বুথের ভিতরে সাংবাদিকদের ঢুকতেও বাধা দেওয়া হয়েছে। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা পুলিশ এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাতে ফোন করেছিলেন। অভিযোগ, সেই ফোনও ধরা হয়নি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘রাজ্যের বিজেপি সরকার পুরভোটে দিনদুপুরে গণতন্ত্রের অমাবস্যা নামিয়ে এনেছে। ভোটের মতো একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে ওরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বুধবার রাতে আমি সুপ্রিম কোর্টের কাছে একটি আর্জি জানাই। আজ তার শুনানি ছিল। তবে শুনানি চালু হওয়ার আগেই এখানে ভোট শুরু হয়ে যায়। আদালত সেই শুনানি চলাকালীন দু’টি নির্দেশ দেয়। এক, বৈধ অনুমতিপত্র থাকা সমস্ত সাংবাদিককে বুথে ঢুকতে দিতে হবে। এবং দুই, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তার কিছুই মানা হয়নি।’’
সিপিএমের অভিযোগ, নিয়ম থাকা সত্ত্বেও তাদের দলের পোলিং এজেন্টদের বুথে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ছবি: ফেসবুক থেকে।
রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বামেরা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এখন বিরোধী দলনেতা। তবে সম্প্রতি পুরভোটে এ রাজ্যের ৭টি পুর এলাকার ১১২টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে বিজেপি। জিতেন্দ্রর অভিযোগ, ‘‘গত ৪৪ মাসে ত্রিপুরায় বিজেপি এবং আইপিএফটি সরকার আসার পর থেকেই আর সেখানে গণতন্ত্র নেই। সংবিধান অচল। এমনকি নির্বাচনকেও সরকার প্রহসনে পরিণত করেছে।’’ আগরতলা-সহ ত্রিপুরার ১৩টি পুর এলাকার ২২২টি আসনে ভোট ছিল বৃহস্পতিবার। সেই ভোটের প্রচারে ত্রিপুরায় ব্যাপক হিংসার অভিযোগ ওঠে। সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত ত্রিপুরা সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। হিংসা ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানাতে বলে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশও দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে। সে প্রসঙ্গ টেনে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট, হাই কোর্টের নির্দেশিকার পরেও ত্রিপুরার প্রশাসন এবং সরকারের টনক নড়েনি। বিজেপি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে চলেছে। হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর লক্ষ্যে ত্রিপুরার মতো একটি ছোট রাজ্যকে ল্যাবরেটরি বানিয়ে স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করছে।’’
অন্য দিকে, বিজেপি-র তরফে সিপিএমের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ভোটের দিন সমস্ত বুথে স্বাভাবিক ভাবেই ভোটপ্রক্রিয়া চলেছে বলে মন্তব্য করেন রাজ্যের মন্ত্রী রতনলাল নাগ। পাল্টা সিপিএমের বিরুদ্ধেই বিজেপিকর্মীদের মারধরের অভিযোগ এনেছেন তিনি। সিপিএমকর্মীদের হাতে মার খেয়ে জখম এক বিজেপিকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে বলেও অভিযোগ। জিতেন্দ্র অবশ্য বলেছেন, ‘‘যিনি এই অভিযোগ এনেছেন তিনি নিজেই এক জন রিগিং মাস্টার। আর তাঁদের মাস্টার মাইন্ড মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। এরা দাঁড়িয়ে থেকে গুন্ডা নামিয়ে রিগিং করিয়েছে। আর মুখে বলছে বুথ স্বাভাবিক ছিল।’’