মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হল সুদীপকে

দু’জনের সম্পর্ক বেশ কিছু দিন ধরেই তিক্ত হয়ে উঠেছিল। বিপ্লববাবু গত কয়েক মাস সুদীপবাবুর মুখোমুখি হননি। মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে অফিসারদের সঙ্গে বসেই মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দফতরের কাজকর্ম পর্যালোচনা করছিলেন।

Advertisement

বাপি রায়চৌধুরী

আগরতলা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

সুদীপ রায়বর্মণ।

গত রাতে সার্জিকাল স্ট্রাইকের ধাঁচেই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণকে। কিছু দিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রী ‘ঘর শত্রু বিভীষণ’-কে তাড়ানোর কথা বলছিলেন। একই প্রসঙ্গে নাম না করে টেনে আনছিলেন সুদীপবাবুর বাবা সমীর বর্মণের শাসনকালের কথাও। কার্যত তখনই বোঝা গিয়েছিল, বিপ্লববাবুর আক্রমণের লক্ষ্য কংগ্রেস থেকে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে আসা সুদীপবাবু। রাজ্য-রাজনীতিতে ঝানু রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত সুদীপ রায়বর্মণ কিন্তু বিপ্লববাবুর এই আঘাতের আঁচ ঘুণাক্ষরেও পাননি। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত জানার পরে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার কাজ দিয়ে আমি নিশ্চয় মুখ্যমন্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে পারছিলাম না।’’

Advertisement

দু’জনের সম্পর্ক বেশ কিছু দিন ধরেই তিক্ত হয়ে উঠেছিল। বিপ্লববাবু গত কয়েক মাস সুদীপবাবুর মুখোমুখি হননি। মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে অফিসারদের সঙ্গে বসেই মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দফতরের কাজকর্ম পর্যালোচনা করছিলেন। ভোটের শেষ দিকে হঠাৎই মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রীর বৈবাহিক সমস্যা সংক্রান্ত ‘জল্পনা’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়ার পর কার্যত মনস্থির করে ফেলেন বিপ্লববাবু। কয়েক দিন আগে রাজ্যপালের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। গত কাল বেশি রাতে হঠাৎই ভারপ্রাপ্ত মুখ্যসচিব বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন।

মন্ত্রিসভা থেকে তাঁকে অপসারণ করা হলেও দল এখনও সুদীপবাবুকে বহিষ্কার করেনি। দলের মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দলের আদর্শ এবং দেশ সবার আগে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটের আগে থেকেই একাধিক অভিযোগ ছিল। সেই সব বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ তবে সে দিকেও যে দল প্রয়োজনে এগোতে পারে, তার ইঙ্গিত নবেন্দুবাবুর কথাতেই রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি কী, সে সম্পর্কে দলীয় মুখপাত্র বলেন, ‘‘এটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ তিনি জানান, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে আরও চার জনকে মন্ত্রী করা হবে। বর্তমান বিধায়কদের গত ১৪ মাসের রিপোর্ট কার্ড দেখেই ঠিক করা হবে, কাকে কাকে মন্ত্রী করা হবে।

Advertisement

গত রাতে সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে সুদীপবাবুর বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর সমর্থকরা যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্যে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এমনকি মন্ত্রীর সরকারি আবাসের সামনেও মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত বাহিনী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement