নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের ঘোষণায় খুশি ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরের জম্পুই হিলসের উপজাতিরা। শৈলশহর জম্পুই হিলসের ভাংমুন গ্রামে বসবাস লুসাই, রিয়াং, ত্রিপুরি উপজাতির লোকেদের। ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট বাতিল হওয়ার পর কিছুটা অসুবিধা হলেও, তা হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন ভাংমুনের বাসিন্দারা। জুমচাষ ও কৃষিকাজই সেখানকার প্রধান জীবিকা। কমলালেবু, সুপারি, ধান, কাজু, কফি ছাড়াও শাকসবজির খেত ছড়িয়ে চারপাশে। সংসার, খেতের কাজ সামলেই উপজাতিরা যাচ্ছেন ব্যাঙ্কে। লাইন দিয়েই টাকা তুলছেন, জমা দিচ্ছেন, বদলাচ্ছেন। কোনও অশান্তি নেই কোথাও।
ভাংমুন ব্লকের বিডিও সজল দেবনাথের কথায়, ‘‘ব্যাঙ্কের পরিষেবায় এখানকার গ্রামবাসীর সন্তুষ্ট।’’ ত্রিপুরার ‘দার্জিলিং’ হিসেবে পরিচিত জম্পুইয়ে পর্যটকদের ভিড় থাকে। ওই ব্লকের সাতটি এডিসি গ্রামের একটি ভাংমুন। বৃহস্পতিবার হাট বসে ভাংমুনে। নগদ টাকার টানাটানি থাকলেও হাটে বেচাকেনা হচ্ছে নির্বিঘ্নেই। ভাংমুন এডিসি গ্রামের চেয়ারম্যান বিকা থাম কিমার কথায়, ‘‘বিমুদ্রাকরণে খুশি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই। ব্যাঙ্কে লাইন দিয়ে টাকা তুলতেও তাঁদের অসুবিধা হচ্ছে না। কারণ, সকলেই চান, দেশ থেকে দূর হোক দুর্নীতি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উপজাতি মানুষ বৃহত্তর স্বার্থে শৃঙ্খলা মানতে প্রস্তুত। তাঁরা ঐকবদ্ধ থাকতেও পছন্দ করেন।’’ উদাহরণ টেনে তিনি জানান, ভাংমুনের রাস্তাঘাটে রাতের দিকে আলোর ঘাটতি মেটাতে নিজেরাই তার ব্যবস্থা করেছেন। সে জন্য বিদ্যুতের বিল মেটান তাঁরাই। কাঞ্চনপুরের এসডিএম সন্তোষ দেবও লুসাইদের এই উদ্যোগের কথা স্বীকার করেছেন। নোট-সঙ্কটে জেরবার ত্রিপুরাও। বিভিন্ন এলাকায় তার প্রভাব পড়েছে ব্যবসাতেও। কিন্তু এমন পরিস্থিতির মধ্যেই জম্পুই পাহাড়ের মানুষ মোদীর সিদ্ধান্তের পাশেই দাঁড়িয়েছেন।
তাঁরা বলছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপে দেশের ভাল হলে, সব সমস্যা হাসিমুখে মেনে নিতে তৈরি।’’