উপজাতি-গ্রামে বৃন্দা কারাট। ত্রিপুরার মান্দাই-এ। নিজস্ব চিত্র।
তাঁদের মন পেতে এ বার বিধানসভা ভোটের আগে রেষারেষি শুরু হয়েছে বিজেপি এবং সিপিএমে! তার দৌলতে পাওনা বাড়তে চলেছে ত্রিপুরার উপজাতি মানুষের!
ত্রিপুরায় এ বার উপজাতি সংগঠন আইপিএফটি-র সঙ্গে জোট হয়েছে বিজেপি-র। রাজ্যে ক্ষমতায় এলে উপজাতি এলাকার জন্য স্বশাসিত জেলা পরিষদ (এডিসি) তুলে দিয়ে নতুন রাজ্য পরিষদ তৈরি করতে চায় বিজেপি। উপজাতি-সহ সব অংশের মানুষের জন্য প্রতিশ্রুতি সংবলিত ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ প্রকাশিত হতে পারে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি আগরতলায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির হাতে। তার আগে বামফ্রন্টের ঘোষণা, রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরলে তারা উপজাতি এলাকাতেও ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নিয়ে যেতে চায়। স্বশাসিত পরিষদের হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়ার আশ্বাসও দিচ্ছেন মানিক সরকারেরা।
বামফ্রন্টের নির্বাচনী ইস্তাহারে বলা হয়েছে: ‘স্বশাসিত জেলা পরিষদের ক্ষমতাবৃদ্ধি-সহ উপজাতি এলাকায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সুযোগ সম্প্রসারণে পঞ্চায়েত আইন ও সংবিধান সংশোধন করতে, উপজাতি সাব-প্ল্যানের জন্য আলাদা ভাবে অর্থ বরাদ্দ করতে, ককবরক ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, বনাধিকার আইনে ভূমি ও পাট্টা প্রাপকদের যথাযথ আর্থিক পুনর্বাসনে অর্থ সাহায্যের জন্য আন্দোলন জারি থাকবে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে কার্যকরী চাপ অব্যাহত রাখা হবে’।
এখন ত্রিপুরার উপজাতি এলাকায় গ্রাম পরিষদ এবং জেলা পরিষদ— এই দু’টি স্তর আছে। পঞ্চায়েতে যেমন গ্রাম পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদের মাঝে পঞ্চায়েত সমিতি থাকে, তেমনই একটি মধ্যবর্তী স্তর উপজাতি এলাকায় চালু করতে চায় বামেরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের সংযোজন, ‘‘উপজাতি এলাকায় কিছু জায়গা উন্নত হয়ে শহরের চেহারা নিয়েছে। সেই সব জায়গায় পুরসভা ব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যও আছে আমাদের।’’
এডিসি ব্যবস্থায় নতুন একটি স্তর আনতে গেলে রাজ্যের পঞ্চায়েত আইনে সংশোধন করতে হবে। যা সরকারে ফিরলে অনায়াসেই করতে পারবে বামেরা। কিন্তু একই সঙ্গে সংসদে সংবিধানের তফসিলে প্রয়োজনীয় সংশোধন দরকার। সিপিএম নেতৃত্ব বলছেন, উপজাতি কল্যাণে ওই কাজ করার জন্য কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়াতে তাঁরা সংবিধান সংশোধনের দাবিকে আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে যাবেন।
বিজেপি নেতারা অবশ্য বামেদের ঘোষণার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার বক্তব্য, ‘‘ওদের তো সংখ্যা নেই সংসদে! কেন্দ্রের কাছে দাবি জানানোর চেয়ে বিজেপি নিজেই উপজাতি কল্যাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সংসদে সেরে ফেলতে পারে। মানুষ তাই বিজেপি-কেই সমর্থন করবেন।’’
ভোটের ফল যা-ই হোক, উপজাতিদের এ বার প্রাপ্তি যোগ!