উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধারের পর শ্রমিকেরা। ছবি: পিটিআই।
টানা ১৭ দিন। অন্ধকার সুড়ঙ্গে যা ১৭ বছরের সমান। বাইরে থেকে উদ্ধারকারীরা সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন ঠিকই, কিন্তু আতঙ্ক তাতেও কম ছিল না। কী ভাবে সুড়ঙ্গের মধ্যে দিন কেটেছে, সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে সেই কাহিনি শোনাচ্ছেন শ্রমিকেরা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের তরফে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা অনিল বেদিয়ার সঙ্গে। সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জনের মধ্যে তিনি অন্যতম। অনিলের মুখে শোনা গিয়েছে, বিপর্যয়ের পরের দু’দিনের কাহিনি। মৃত্যুকে একেবারে সামনে থেকে ছুঁয়ে দেখেছেন তাঁরা। বাঁচার আশা ছিল না বললেই চলে।
অনিল জানান, ধস নামার প্রায় ৭০ ঘণ্টা পরে উদ্ধারকারীদের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়। কিন্তু তার আগে অন্তত দু’দিন নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হয় শ্রমিকদের। খাবার বা জল, কিছুই তাঁদের কাছে ছিল না। একসময় তেষ্টার তাড়নায় সুড়ঙ্গের পাথর বেয়ে গড়িয়ে পড়া ফোঁটা ফোঁটা জল চেটে খান। তাতে অবশ্য তেষ্টা মেটেনি।
উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলে মুড়ি পাঠানো হয়। সেই মুড়ি খেয়ে ১০ দিন কাটান অনিলেরা। তিনি বলেন, ‘‘সময়টা দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। তেষ্টা মেটাতে পাথরের গা থেকে গড়ানো জল চেটেছি। প্রথম ১০ দিন মুড়ি খেয়ে কাটিয়েছি। বাঁচব বলে ভাবিইনি। প্রথম আশার আলো দেখলাম, যখন কর্তৃপক্ষের তরফে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হল।’’
সুড়ঙ্গের ৬০ মিটার পিছনে আটকে পড়েছিলেন শ্রমিকেরা। যন্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে খুঁড়ে তাঁদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে যন্ত্র ভেঙে যায়। এর পর শেষ ১০-১২ মিটার খনিশ্রমিকেরা ‘র্যাট-হোল মাইনিং’ পদ্ধতিতে শাবল-গাঁইতি দিয়েই খুঁড়ে ফেলেন। মঙ্গলবার রাতে ৪১ জন শ্রমিককে সুড়ঙ্গ থেকে বার করে আনা হয়েছে।