Puri

উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ফণী, কালকের মধ্যে পুরী ছাড়ার নির্দেশ পর্যটকদের

জেলাশাসকের নির্দেশ মতো সব হোটেলই পর্যটকদের পুরীতে না থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।

Advertisement

স্বরলিপি ভট্টাচার্য

পুরী শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ১৮:১৭
Share:

লাল ও হলুদ সতর্কতা জারি ওড়িশা সমুদ্র উপকূলে। নিজস্ব চিত্র

সৈকত শহর পুরীতে পর্যটকদের হোটেল ছাড়ার পরামর্শ দিল ওড়িশা সরকার। শুক্রবার বিকেলেই ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে তীব্র সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ফণী।এই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে আগামী কাল বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সমস্ত হোটেল খালি করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মালিকদের। ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতার বিষয়টি মাথায় রেখে ওড়িশা উপকূল বরাবর কোথাও চূড়ান্ত (লাল) সতর্কতা, কোথাও মাঝারি (হলুদ)সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর।

Advertisement

যাঁরা ইতিমধ্যেই পুরীতে পৌঁছেছেন, তাঁদের শহর ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসকের নির্দেশ মতো সব হোটেলই পর্যটকদের পুরীতে না থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু সব জানা সত্ত্বেও অনেক পর্যটক হোটেল ছাড়তে রাজি না হওয়ায় সমস্যায় পড়ছে প্রশাসন এবং হোটেল মালিকেরা।

পুরীর ট্যুর অপারেটর নীলাম্বর মহাপাত্র আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘পরিস্থিতি ঠিক কী হতে পারে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কিন্তু পর্যটকরা পুরী ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না। যাঁদের বুকিং ইতিমধ্যেই হয়ে রয়েছে, তাঁদের বুকিং তো আমরা জোর করে বাতিল করতে পারছি না। কিন্তু সকলকেই বলছি, এই সময়ে পুরীতে না আসতে। যাঁরা এসে পৌঁছেছেন তাঁদেরকেওপুরী ছেড়ে চলে যেতে বলছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার মাধ্যমে যাঁরা হোটেল বুক করেছেন, তাঁরা কেউ পুরী ছেড়ে যেতে রাজি নন। তাঁরা বলছেন, প্রয়োজন হলে বিচের সামনের হোটেলে থাকবেন না, পিছনের দিকের কোনও হোটেলে চলে যাবেন, প্রয়োজনে আমার বাড়িতে থাকবেন, কিন্তু এখন ক’দিন পুরীতেই থাকবেন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: বাংলায় ১১৫ কিলোমিটার বেগে ‘ছোবল’ মারতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী

আজ সারাদিন পুরীতে ঝকঝকে আবহাওয়া থাকলেও আগামিকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে আশঙ্কা আবহবিদদের। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলেই পুরী জেলার শতপদায় আঘাত হানবে তীব্র ঘূর্ণিঝড় ফণী। উপকূলে আঘাত হানার সময় সেই ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ২০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলেই আশঙ্কা। ঝড়ের সময় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। খালি করতে বলা হয়েছেউপকূল এলাকার ঘরবাড়ি। রেল ও সড়কপথ সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আগামী শুক্র এবং শনিবার দরকার না পড়লে রাস্তায় বেরতেও নিষেধ করা হয়েছে সাধারণ মানুষকে।

সাধারণত সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিমি হয়ে থাকে। কিন্তু মারাত্মক তীব্র সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে তা গিয়ে দাঁড়ায় ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। ফণী এই পর্যায়ের (এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) ঘূর্ণিঝড় বলেই জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।

আরও পড়ুন: ২০৫ কিমি বেগে গোপালপুর-চাঁদবালির উপর শুক্রবার আছড়ে পড়তে পারে ফণী

পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার আগে এই ঝড় পুরীর পাশাপাশি ওড়িশার জগৎসিংহপুর, কটক, খুর্দা, জাজপুর, ভদ্রক, বালেশ্বর এবং ময়ুরভঞ্জ দিয়ে যাবে। শুক্রবার বিকেলে উপকূলে আঘাত হানার পর ঝড়ের তীব্র দাপট জারি থাকবে টানা ১২ ঘণ্টা। ঝড়ের সঙ্গে ভারী ও অতিভারী বৃষ্টিপাতও। তার পর আস্তে আস্তে কমবে ঝড়ের তীব্রতা। গত বছরে ওড়িশা উপকূলে ধেয়ে আসা তিতলি-র থেকেও এই ফণী অনেক বেশি শক্তিশালী, এমনটাই জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement