বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লিতে আসতে পারেন তৃণমূলনেত্রীও।— ফাইল চিত্র।
সব ঠিক থাকলে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জোটের সলতে পাকাতে ১০ ডিসেম্বর এককাট্টা হচ্ছেন তৃণমূল ও সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর উদ্যোগে ওই বৈঠকে যোগ দিতে তৃণমূলনেত্রী দিল্লিতে আসতে পারেন। আজ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁরাও ওই বৈঠকে যোগ দেবেন। আজ ইয়েচুরি আগরতলায় বলেন, ‘‘১০ ডিসেম্বরের বিরোধীদের বৈঠকের বিষয়ে চন্দ্রবাবু ফোন করেছিলেন। সাধারণত প্রত্যেক বারই সংসদের অধিবেশনের আগে বিরোধীদের বৈঠক হয়। কিন্তু এ বার কোনও সাধারণ বৈঠক হচ্ছে না। এই বৈঠকে নানা রকম সম্ভাবনা খোঁজা হবে। সেখান থেকে এগোনো হবে।’’
রাজ্যে বিবাদ থাকলেও, জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি-বিরোধিতায় তৃণমূল ও সিপিএমের নেতাদের একাধিক বার নানা মঞ্চে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে। মমতা ব্রিগে়ডে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আন্দোলনের সময়ে বিজয়নের সঙ্গেই লেফটেনান্ট গভর্নরের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। সংসদের ভিতরেও দুই দল অনেক বিষয়ে একই অবস্থান নিচ্ছে। সিপিএম নেতারা বুঝতে পারছেন, মমতার ছোঁয়া বাঁচিয়ে চলা এবং বিজেপি-বিরোধী জোটে থাকা, দু’টি একসঙ্গে সম্ভব নয়।
রাজনৈতিক কৌশলের দিক থেকেও মমতা ও ইয়েচুরি প্রায় একই অবস্থানে। দু’জনেই মনে করেন, রাজ্য স্তরে যে যেখানে শক্তিশালী, সেই অনুযায়ী জোট করে লড়া হোক। পরে বাকিটা ঠিক করা হবে। সিপিএম সূত্রের খবর, চন্দ্রবাবু আনুষ্ঠানিক ভাবে এখন ইয়েচুরিকে আমন্ত্রণ জানালেও আগে থেকেই দু’জনের যোগাযোগ রয়েছে। দু’জনেই তেলুগু। রাহুল গাঁধী ও চন্দ্রবাবুর মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে তোলার পিছনেও ইয়েচুরির ভূমিকা রয়েছে বলে সূত্রের দাবি।
১৯৯৬-তে যুক্তফ্রন্ট সরকার তৈরির সময়ে সিপিএমের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হরকিষেণ সিংহ সুরজিত নানা দলের মধ্যে সমন্বয় রেখে চলার কাজটি করতেন। এখন চন্দ্রবাবু সেই কাজটি করছেন। সে সময় ভি পি সিংহ, এম করুণানিধি, এইচ ডি দেবগৌড়া, মুলায়ম সিংহ যাদবের মতো নেতারা প্রধান চরিত্র ছিলেন। এখন তাঁদের পরের প্রজন্মই প্রধান মুখ। সে সময় চন্দ্রবাবু পিছনের সারিতে ছিলেন। এখন তিনি প্রথম সারিতে। নতুন মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন মমতা, কেজরীওয়ালরা। পশ্চিমবঙ্গে বিবাদের কথা ভেবে এই জোট থেকে দূরত্ব রাখলে জাতীয় রাজনীতিতে একঘরে হয়ে পড়তে হবে বুঝেই সিপিএম এখন তৃণমূলের সঙ্গে এক মঞ্চে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।