দিশা রবি।
টুলকিট মামলায় দিশা রবিকে তিন দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল দিল্লির পটিয়ালা হাউস আদালত। কৃষক আন্দোলনকে সমর্থনের নামে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ ছিল দিশার বিরুদ্ধে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজত শেষ হয় শুক্রবার। তাই দিশাকে এদিন ফের আদালতে তোলা হয়। অতিরিক্ত মুখ্য মেট্রোপলিটন বিচারক আকাশ জৈন দিশাকে এ বার তিন দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
কৃষক আন্দোলনকে সমর্থনের ডাক দিয়ে নেটমাধ্যমে একটি তথ্যপত্র বা ‘টুলকিট’ শেয়ার করেছিলেন দিশা। তাতেই দেশদ্রোহিতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল। ২২ বছরের পরিবেশ কর্মী দিশার বিরুদ্ধে ওই টুলকিট তৈরি করার অভিযোগও এনেছিল দিল্লি পুলিশের তদন্তকারীরা। যদিও দিশা নিজে জানিয়েছিলেন, তিনি ওই টুলকিট বানাননি। টুলকিটের কিছু তথ্য সম্পাদনা করেছিলেন মাত্র।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয়েছিল দিশাকে। পাল্টা দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। পুলিশ তাঁর ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ কথাবার্তা সাংবাদিকদের কাছে ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। শুক্রবার তাঁর গ্রেফতারির মামলা উঠেছিল দিল্লির পটিয়ালা হাউস আদালতে। আদালত দিশাকে তিন দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
সুইডেনের পরিবেশে আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন দিশা। এই গ্রেটাই ভারতের কৃষক আন্দোলন সংক্রান্ত টুলকিটটি প্রথম শেয়ার করেন নেটমাধ্যমে। হোয়াটসঅ্যাপে কৃষক আন্দোলন নিয়ে গ্রেটার সঙ্গে দিশার কথাবার্তাই পুলিশ ফাঁস করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন দিশা। অন্যদিকে দিল্লি পুলিশের অভিযোগ ছিল ভারতের কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে গ্রেটার মতো বহিরাগতরা দেশে বিরূপ মতামত তৈরি করছেন। দেশদ্রোহিতাকে উসকানি দিচ্ছে তারা। আর তাতে মদত দিচ্ছে দিশার মতো দেশেরই কিছু তরুণ তরুণী।
এই মামলায় শান্তনু মুলুক নামে এক তরুণ ইঞ্জিনিয়ার এবং আইনজীবী নিকিতা জেকবেরও নাম করে দিল্লি পুলিশ। এঁদের দু’জনকেই মুম্বইয়ের আদালত শর্তসাপেক্ষ জামিন দিয়েছে। শান্তনুকে ১০ দিনের মধ্যে এবং নিকিতাকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আদালতে হাজির থেকে পরবর্তী জামিনের আবেদন করতে হবে। গত ২৬ জানুয়ারি কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালির আগের দিন রাতে এঁদের সঙ্গে জুম মিটিং করেন দিশা। দিল্লি পুলিশ অভিযোগ করেছিল, ওই জুম মিটিংয়ে ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে বড়সড় প্রচারে নামার পরিকল্পনা করেছিলেন দিশারা। যদিও তার আগেই গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দিশাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ।তবে দিশার গ্রেফতারি নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় দিল্লি পুলিশকে।