কুয়ো থেকে উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের দেহ। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
তেলঙ্গানায় ন’জনের মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার এক ২৪ বছরের যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার ওয়ারাঙ্গল জেলার গোরেকুন্টা গ্রামে একটি কুয়ো থেকে চার জনের দেহ উদ্ধার হয়, পরের দিন আরও পাঁচ জনের দেহ মেলে সেখান থেকে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল, লকডাউনের জেরে বেতন না পেয়ে তাঁরা আত্মহত্যা করেছিলেন।
হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ওই গ্রাম। মৃত ৯ জনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একই পরিবারের ছ’ জন, দু’ জন বিহার এবং একজন ত্রিপুরার বাসিন্দা। মৃত্যু হয় মাকসুদ (৪৮), তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে, মেয়ে বুশ্রা ও বুশ্রার তিন বছরের ছেলের। এঁদের সঙ্গে আরও তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়।
এই ৯ জনের মধ্যে সাত জনই একটি ব্যাগ কারখানায় সেলাইয়ের কাজ করতেন। যাঁদের মধ্যে মাকসুদ প্রায় ২০ বছর আগে সেখানে যান। পরে ওয়ারাঙ্গলের ওই এলাকাতেই বসবাস শুরু করেন। কারখানা এলাকার মধ্যেই দু’টি ঘর নিয়ে থাকত এই ৬ জনের পরিবার।
আরও পড়ুন: রাস্তায় গাড়ি থেকে ফেলে প্রতিশোধ নিল মহিষ, ক্যামেরায় ধরা পড়ল সেই দৃশ্য
কুয়ো থেকে উদ্ধার হওয়ার পর দেহগুলিতে কোনও আঘাতের চিহ্ন না থাকায় প্রথমে মনে করা হয়, তাঁরা সবাই আর্থিক অনটনের কারণেই গণআত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মার্চ মাসে এক মহিলা নিখোঁজ হয়ে যান। অভিযুক্ত সঞ্জয় কুমার যাদব যিনিও বিহার থেকে গিয়েছিলেন, এই নিখোঁজের পিছনে তাঁর হাত রয়েছে। তিনি ওই মহিলাকে ৬ মার্চ খুন করেন বলে অভিযোগ। সে কথাই পুলিশকে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান মাকসুদের স্ত্রী। এর পরই একটি খুনের ঘটনা ধামা চাপা দিতে ৯ জনকে খুন করার পরিকল্পনা করেন সঞ্জয়।
আরও পড়ুন: একাই দিল্লি থেকে বেঙ্গালুরু ফিরল ৫ বছরের শিশু
সঞ্জয় তাঁদের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। তারপর অচৈতন্য হয়ে পড়লে সবাইকে টেনে কুয়োয় নিয়ে গিয়ে ফেলে দেন। সেখানে জলে ডুবে মৃত্যু হয়। প্রথমে তাদের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন না পেলেও পরে কিছু আঁছড় দেখতে পান তদন্তকারীরা। এর পরই তদন্ত অন্য দিকে মোড় নেয়। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞসাবাদ শুরু করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত সঞ্জয় খুনের কথা স্বীকার করে নেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওয়ারাঙ্গলের পুলিশ কমিশনার ভি রবীন্দ্র জানিয়েছেন, যাতে অভিযুক্তের কঠোরতম সাজা হয় সে জন্য তাঁরা সব রকম চেষ্টা করবেন।