প্রধানমন্ত্রীর পোশাক নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করে বিতর্কে তৃণমূলের কীর্তি আজ়াদ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পোশাক নিয়ে তির্যক মন্তব্য করে বিজেপির তোপের মুখে পড়লেন তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার কীর্তি আজ়াদ। উত্তর-পূর্ব সফরকালে মোদী সেখানকার একটি পোশাক পরেছিলেন। কীর্তি সেই ছবির পাশে অনলাইনে বিক্রি হওয়া একই রকম একটি পোশাক পরিহিত মহিলার ছবি পোস্ট করেছেন। লিখেছেন একটি ব্যাঙ্গাত্মক কবিতা। তার জেরেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিজেপির আক্রমণের লক্ষ্যে তিনি।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর পোশাক-প্রেম বহুল চর্চিত। বস্তুত, তিনি যখন যে রাজ্যে যান, সেই রাজ্যের পোশাকে ধরা দেন। ঠিক যেমন সাম্প্রতিক মেঘালয় ও ত্রিপুরা সফরে দেখা গেল। মেঘালয়ের পোশাক পরে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কীর্তি সেই ছবিকেই কটাক্ষের বিষয়বস্তু বানিয়েছেন। মোদীর ছবির পাশে আরও একটি ছবি শেয়ার করেছেন তিনি। যে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী যে পোশাক পরে আছেন, হুবহু একই রকম একটি পোশাক পরিহিত এক মহিলাকে। তাতে রয়েছে পোশাকের দামও। পাশাপাশি কীর্তি লিখেছেন একটি দু’লাইনের কবিতা। যার বাংলা ভাবার্থ হল, ‘না নর, না নারী, তিনি কেবল ‘ফ্যাশনের’ পূজারী!’
এতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছে বিজেপি। বিষয়টিকে প্রধানমন্ত্রীর অপমান হিসাবে তুলে ধরে আক্রমণ করা হয়েছে তৃণমূল নেতাকে। তাতে যোগ দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘‘কীর্তি শুধু প্রধানমন্ত্রীকেই অপমান করেননি, তিনি মেঘালয়ের সংস্কৃতিরও অপমান করেছেন।’’ একই সঙ্গে তৃণমূলের দিকে তাঁর প্রশ্ন, অবস্থান স্পষ্ট করুন।
হিমন্তকে জবাব দিতে দেরি করেননি কীর্তি। তিনি পাল্টা টুইটে জানিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রীর পোশাকের সংগ্রহ দেখে তাঁর ভালই লাগে। মোদীকে অপমানের কোনও ইচ্ছা তাঁর নেই। তিনি লেখেন, ‘‘আমি বলতে চাইছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ফ্যাশন স্টেটমেন্ট দিতে ভালবাসেন। এবং তা করতে কোনও সুযোগই হাতছাড়া করেন না।’’
আসরে নেমে পড়েছে বিজেপির তফসিলি মোর্চাও। কীর্তিকে ‘শ্রী অমার্জিত’ আখ্যা দিয়ে তাঁর এই মন্তব্যের নিন্দা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর পোশাক-প্রেম নিয়ে আলোচনা বা বিতর্ক নতুন কোনও বিষয় নয়। এর আগেও একাধিক বার নিজের পোশাকের জন্য বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়েছেন মোদী। যদিও দল বরাবরই মোদীর পাশেই থেকেছে। কিছু দিন আগেই তৃণমূলের আর এক নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, সেই দাবি তুলে পথে নেমে পড়েছিল বিজেপি। এ বিষয়ে মুখ খুলতে হয় দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অখিলকে ক্ষমাও চাইতে হয়। সেই সময়েই বাংলার এক আদিবাসী মহিলা মন্ত্রীকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল। যদিও সে বিষয়ে আগাগোড়া নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল বিজেপি।