ফাইল ছবি
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে মঙ্গলবার মার্গারেট আলভা মনোনয়ন জমা দেবেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি সেখানে থাকবেন না বলেই রাজনৈতিক শিবিরের খবর। কারণ, এখনও তৃণমূল উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কাকে সমর্থন জানাবে, তা ঠিক করেনি। এমনকি, আম আদমি পার্টিও আলভাকে সমর্থন করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
আজ উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে শরদ পওয়ারের বাড়িতে বিরোধী দলের নেতাদের ফের বৈঠক বসেছে। সেখানে কংগ্রেস, এসপি, বাম, এনসিপি-সব বিরোধী দলের নেতারা হাজির ছিলেন। আলভা নিজেও বৈঠকে হাজির হন। কিন্তু তৃণমূলের প্রথম সারির সাংসদদের কেউ এ দিন দিল্লিতেই ছিলেন না। লোকসভার সাংসদ সৌগত রায়, প্রতিমা মণ্ডল ও রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায় মঙ্গলবার সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লিতে থাকবেন। কিন্তু আলভার মনোনয়ন জমার সময়ে তাঁদের কারও হাজির থাকার সম্ভাবনা নেই।
জগদীপ ধনখড় না মার্গারেট আলভা— তৃণমূল কাকে সমর্থন করতে চলেছে, তা নিয়ে এ দিন বিধানসভায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ খুলতে চাননি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত। সমাবেশের পরে কালীঘাটে দলনেত্রী বৈঠক ডেকেছেন। দলের সব সাংসদদের সেখানে থাকতে বলা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সেখানে আমাদের এ বিষয়ে যা বলার বলবেন।’’
এ দিন শরদ পওয়ারের বাড়ির বৈঠকে আম আদমি পার্টির কোনও নেতাও যাননি। আম আদমি পার্টি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী শিবিরের প্রার্থী যশবন্ত সিন্হাকেই সমর্থন করেছে। কিন্তু মার্গারেট বিরোধী শিবিরের প্রার্থী হলেও আদতে কংগ্রেস নেত্রী। ফলে কংগ্রেসের কাউকে কেজরীওয়াল সমর্থন করতে রাজি হবেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। যশবন্ত সিন্হার ক্ষেত্রে কেজরীওয়ালের সেই অসুবিধা ছিল না। বিরোধী নেতারা জানেন, মার্গারেট আলভার হার নিশ্চিত। কারণ, লোকসভা, রাজ্যসভা মিলিয়ে সাংসদরা ভোট দেবেন। সেখানে বিজেপি একার ভোটেই ধনখড়কে জিতিয়ে আনতে পারে। তা সত্ত্বেও বিরোধী শিবিরের ভোট যত বেশি সম্ভব বাড়াতে চাইছেন শরদ পওয়ার, মল্লিকার্জুন খড়্গে, সীতারাম ইয়েচুরিরা। শিবসেনা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করলেও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে উদ্ধব ঠাকরে আলভাকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর দলের ১৪ জন সাংসদ এ দিন শিবসেনার একনাথ শিন্ডের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের আনুগত্য জানিয়েছেন। ফলে তাঁরাও ধনখড়কে সমর্থন করবেন বলেই আশঙ্কা উদ্ধব শিবিরের।
কংগ্রেসের প্রথম থেকেই অবস্থান ছিল, দলের কাউকে রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী করা হবে না। আলভা প্রার্থী হওয়ায় কংগ্রেসেরও অনেকে অখুশি। কারণ, আলভা গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন হলেও অতীতে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে শরদ পওয়ারের সঙ্গে সমাজবাদী কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পরে ফিরে আসেন। ২০০৮-এ কর্নাটক নির্বাচনের সময় তাঁর ছেলে টিকিট না পাওয়ায় টাকার বিনিময়ে টিকিট বিলির অভিযোগ তুলে দলের সব পদ থেকে অপসারিত হয়েছিলেন। এ জন্য তিনি পরে প্রবীণ নেতা এ কে অ্যান্টনিকেও দায়ী করেছিলেন। তাঁর শ্বশুর জোয়াকিম আলভা লোকসভার সাংসদ ছিলেন। শাশুড়ি ভায়োলেট আলভা রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন।