ফাইল ছবি
সারদা-রোজ় ভ্যালির মতো ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার দৌরাত্ম্য রুখতে আজ মোদী সরকার সংসদে নতুন বিল পেশ করল। আর সেই বিল পেশের সময়ই বিরোধিতায় সরব হল তৃণমূল। দলের সাংসদ সৌগত রায়ের যুক্তি, কড়া আইনে তৃণমূলের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু মোদী সরকার যে সার্বিক আইন তৈরির কথা বলেছিল, এই বিল সেই মাপকাঠিতে উতরোয় না। বিলে বাধা দিতে গিয়ে বিজেপি বেঞ্চ থেকে সারদার খোঁটা শুনতে হয়েছে তৃণমূল নেতাকে। কিন্তু সৌগতর পাল্টা দাবি— মোদী সরকারের আমলেই এই ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার রমরমা হয়েছে।
চড়া সুদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পঞ্জি স্কিম বা বেআইনি সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা সংগ্রহ এবং তার পরে লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত না-দেওয়ার অপরাধে নতুন আইনের খসড়ায় ১০ বছর পর্যন্ত জেলের বিধান রাখা হয়েছে। আজ লোকসভায় ‘বেআইনি সঞ্চয় প্রকল্প নিষেধাজ্ঞা বিল’ পেশ করে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণণ বলেন, এখন এক এক ধরনের সঞ্চয় প্রকল্প নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব এক এক সংস্থার উপর। কোথাও সেবি, কোথাও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, কোথাও রাজ্য সরকার, কোথাও কেন্দ্র। এর ফাঁক দিয়ে অনেক সংস্থাই গলে যাচ্ছে। এক এক রাজ্যের আইনও এক এক রকম। সে কারণেই অরুণ জেটলি বাজেটে সার্বিক আইনের কথা বলেছিলেন। ভুয়ো সঞ্চয় প্রকল্প পুরোপুরি বন্ধ করে, লগ্নিকারীদের টাকা দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে এই বিলে।
সৌগতবাবুর অবশ্য যুক্তি— পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, পঞ্জাব, ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হওয়ার পরে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সার্বিক কেন্দ্রীয় আইনের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু এই বিলটিতে কিছু বিষয়ে ফাঁকফোকর বোজানোর চেষ্টা ছাড়া কিছুই নেই।সরকার এই বিল প্রত্যাহার করে নতুন বিল আনুক। তবে সরকারি বেঞ্চের শক্তির জোরে তৃণমূলের আপত্তি ধোপে টেকেনি।
• নজরদারি, সিবিআই তদন্ত বা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা জাতীয় স্তরে সংস্থার হাতে। দায়িত্বে সচিব স্তরের অফিসার
• বেআইনি প্রকল্পের প্রচার ও টাকা তোলা নিষিদ্ধ
• অর্থ সংগ্রহ ও প্রকল্পের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে জানানো বাধ্যতামূলক
•লগ্নিকারীদের টাকা ফেরাতে রাজ্য স্তরে সংস্থা
• বেআইনি ভাবে টাকা তোলার চেষ্টায় ৫ বছর পর্যন্ত জেল, ২-১০ লক্ষ টাকা জরিমানা
• বেআইনি ভাবে টাকা তুললে ৭ বছর পর্যন্ত জেল, ৩-১০ লক্ষ টাকা জরিমানা
• সময়ে টাকা ফেরত না দিলে ১০ বছর পর্যন্ত জেল, ৫ লক্ষ টাকা বা সংগৃহীত অর্থের দ্বিগুণ জরিমানা