গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্নায় পোস্টার হাতে স্লোগান তৃণমূলের সাংসদদের। ছবি: পিটিআই।
এক দিকে ভারসাম্য অন্য দিকে জনতার উদ্দেশে বার্তা— সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে একই সঙ্গে দু’টি কাজ করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই কংগ্রেস তথা অন্য বিরোধী দলগুলি্র সঙ্গে না গিয়ে একক বিরোধিতার রাস্তায় চলছে তৃণমূল। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল আসলে তদন্তকারী সংস্থার কোপে পড়তে চাইছে না। ইডি-র হাত তৃণমূল নেতৃত্বের দিকে যেন আরও প্রসারিত না হয়, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চিত করতে চাইছেন— তাই বিরোধিতার প্রশ্নে ‘ভারসাম্য’ রাখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, তারা যে জনতার স্বার্থেই পদক্ষেপ করতে চাইছে, চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে সাধারণ মানুষের কাছে এমন বার্তা দেওয়া জরুরি তৃণমূলের জন্য। তাই আজ সকালে সংসদ ভবনে গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্নায় পোস্টার হাতে গৌতম আদানির নাম করে স্লোগান দিতে দেখা গেল তৃণমূলের সাংসদদের। সূত্রের খবর, আগামিকাল সকালেও ওই একই জায়গায় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্র-বিরোধী ধর্না দিতে দেখা যাবে তৃণমূলের দুই কক্ষের সাংসদদের।
আদানি-কাণ্ড সংক্রান্ত হিন্ডেনবার্গ-এর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর এখনও পর্যন্ত সংসদের ভিতরে বা বাইরে আদানির নাম করে সরকারকে আক্রমণ করতে দেখা যায়নি তৃণমূলকে। রিপোর্টটি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। সংসদে আলোচনার জন্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে নোটিস দেওয়া হয়েছিল, সেখানেও জীবনবিমা এবং এসবিআই-এ সাধারণ মানুষের লগ্নির নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু আজ তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভার সুখেন্দুশেখর রায়, দোলা সেন, শান্তনু সেনরা সম্মিলিত ভাবে যে পোস্টার প্রদর্শন করেন সেখানে আদানির নাম রয়েছে। দোলা সেন স্লোগান দিয়ে বলেন, দেশের মানুষের টাকা লুট করতে আদানিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি জনসাধারণকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদে। এসবিআই ও এলআইসি-র মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠানের উপর চাপ সৃষ্টি করে আদানিদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে আসতে হবে ও মানুষকে এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে হবে।”
তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “স্লোগান দেওয়া হয়েছে অধিবেশন কক্ষের বাইরে। কোনও নাম (আদানি) উচ্চারণ করা নিয়ে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়নি। আসল বিষয় হল, গোটা ঘটনার সঙ্গে সাধারণ মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। জীবনবিমা এবং এসবিআই-এ মানুষের লগ্নি বিপদের মুখে। সেটাই আজ তুলে ধরা হয়েছে।”