ED Summons Dev

দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে সকাল ১১টায় হাজির দেব, গরুপাচার মামলায় জেরার মুখে তৃণমূল সাংসদ

ইডি অফিসে রওনা হওয়ার আগে দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দেব। সেখানে তিনি দাবি করেন, তিনি চুরি করেননি, তাই তাঁর কোনও ভয়ও নেই। ইডি যত বার ডাকবে, তত বারই তিনি আসবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:০৭
Share:

দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে হাজির হলেন তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দেব। — ফাইল চিত্র।

রাজধানী দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে হাজির হলেন তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দেব। গরুপাচার মামলায় তাঁকে দিল্লির অফিসে তলব করেছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তিনি ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছিলেন, তদন্তে সমস্ত রকম সহযোগিতা তিনি করবেন। সেই কথা মতোই সকাল ১১টায় ইডির সদর দফতরে পৌঁছে গেলেন দেব।

Advertisement

দিল্লিতে ইডির অফিসে হাজিরা দিতে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দেব। সেখানে তিনি জানান, তদন্তে সহযোগিতা করবেন বলেই শুটিং বাতিল করে ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে দিল্লি চলে এসেছেন তিনি। পাশাপাশি, তিনি কোনও অপরাধ করেননি বলেও আবার দাবি করেন ঘাটালের সাংসদ। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আসন্ন লোকসভা ভোটে আবার তৃণমূল প্রার্থী হবেন, এটা স্পষ্ট হওয়ার প্রেক্ষিতেই কি ইডির ডাক বলে তিনি মনে করছেন? এর জবাবে তৃণমূলের তারকা সাংসদ জানান, এই প্রশ্নের জবাব তিনি এখন দিতে চান না। তিনি বলেন, ‘‘চুরি করিনি, তাই কোনও ভয় নেই। যত বার ইডি ডাকবে, আসব। আজও শুটিং বাতিল করে এসেছি।’’

২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নিজ়াম প্যালেসে দেবকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল, গরু পাচারকাণ্ডে বিভিন্ন সাক্ষীকে জেরা করার সময় দেবের নাম উঠে এসেছিল। সেই কারণে তাঁকে ডাকা হয়েছিল বলে মনে করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে দেব জানিয়েছিলেন, ‘‘একজন ব্যক্তিকে চিনি কি না, সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। আমার বক্তব্য জানিয়েছি। মনে হয় আর ডাকবে না।’’ ২০২৩ সালে দেবের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক তথা অভিনেতা হিরণ। তাঁর অভিযোগ, গরু পাচারকাণ্ডে ধৃত এনামুল হকের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা নিয়েছেন ঘাটালের সাংসদ। দেব পাল্টা জানিয়েছিলেন, তথ্যপ্রমাণ থাকলে ইডি বা সিবিআইয়ের কাছে যান হিরণ। বুধবারও একই প্রশ্ন করা হয়েছিল দেবকে, তার জবাবও সরাসরিই দেন দেব। বলেন, ‘‘এনামুলের কাছ থেকে কোনও টাকা আমার অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। এনামুল হককে সত্যি আমি চিনি না।’’

Advertisement

এই প্রেক্ষিতেই দেবের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তার কারণ অবশ্য দেবেরই করা কিছু কাজ। সম্প্রতি তিনি নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কয়েকটি সংগঠনের প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। লোকসভার এই মেয়াদের শেষ অধিবেশনের ছবি পোস্ট করে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছিলেন। তাতে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, দেব সম্ভবত আসন্ন লোকসভায় আর তৃণমূল প্রার্থী হতে চাইছেন না। কিন্তু তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে বরফ গলে। দেব মন্তব্য করেন, তিনি রাজনীতি ছাড়তে চাইলেও, রাজনীতি তাঁকে ছাড়বে না। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা যায় ঘাটালের সাংসদকে। সেখানে দেব নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া জল্পনা কাটান। আরামবাগের মঞ্চে দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, ‘‘দিদির হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছিলাম। দিদির হাত ধরেই থেকে গেলাম। আমার দেখা শ্রেষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী দিদি।’’ তার মধ্যেই ইডির তলব এসে পৌঁছয় দেবের দুয়ারে। তা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছুই বলেননি অভিনেতা-সাংসদ। যদিও দেবের ঘনিষ্ঠমহল থেকে প্রথম থেকেই জানানো হচ্ছিল যে, ইডি যত বার তাঁকে ডাকবে, তত বারই তিনি হাজিরা দেবেন। তদন্তে সমস্ত রকম সহযোগিতা করবেন। সেই মতোই ইডির তলবে সাড়া দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেব পৌঁছে গেলেন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিটির সদর দফতরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement