মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফরে দেখা করেননি সনিয়ার সঙ্গে। ফাইল চিত্র।
সোমবার কংগ্রেসের ডাকে বিরোধীদের বৈঠক। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে হাজির থাকছে না তৃণমূল।সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকা বিরোধী দলগুলির বৈঠকে তৃণমূল উপস্থিত থাকবে না।’’ যদিও একটি সূত্রের দাবি, বিষয়টি জানার পর কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী নিজে তৎপর হয়েছেন। কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা মল্লিকার্জুনকে তিনি ব্যাপারটি খতিয়ে দেখতে বলেছেন। এমনকি তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন সনিয়া। যদিও কংগ্রেসের লোকসভার সংসদীয় দলের অন্য একটি সূত্র বলছে, দলের একটা অংশ তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চায় না। বিষয়টি তাঁরা দলনেত্রী সনিয়াকেও জানিয়েওছেন। তবে তৃণমূলের তরফ থেকে বৈঠক এড়িয়ে যাওয়ারই স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দেশের সমস্ত বিরোধীদলগুলির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্যই মূলত সোমবার বিরোধী দলগুলির বৈঠক ডেকেছে কংগ্রেস। সেখানে বিরোধী নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন। কিন্তু তৃণমূল সেই বৈঠকে হাজির থাকবে না বলে একপ্রকার জানিয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের ফাটল ক্রমেই চওড়া হওয়ার ইঙ্গিত আরও একবার মিলেছিল সম্প্রতি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফরে যাওয়ার পর। এই সফরে তিনি দেখা করেননি সনিয়ার সঙ্গে। এ ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে মমতা জানিয়েছিলেন, প্রত্যেকবার দিল্লি এলেই তাঁকে বিরোধী নেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে হবে এমন কোনও নিয়ম আছে কি! মমতা বলেছিলেন, ‘‘আমি ওঁর (সনিয়া) কাছে সময় চাইনি।’’
সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে কংগ্রেসের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয়ের কোনও প্রশ্ন নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় তৃণমূল নেত্রী মমতা দিল্লিতে থাকাকালীন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পতাকা উড়িয়েছিল তাঁর দল। মেঘালয় কংগ্রেসে বড় ভাঙন ধরিয়েছে তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মেঘালয়-কাণ্ডে ‘আহত’ কংগ্রেস বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির কৌশল স্থির করেছিল। সেখানেও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে জানিয়েছিলেন, তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয় করতে চান। যদিও তাতে আপত্তি ছিল কংগ্রেসের লোকসভা নেতা অধীর চৌধুরীর। কিন্তু এই সংক্রান্ত প্রশ্নই আপাতত অবাম্তর হয়ে গেল।
অন্য দিকে, তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলের গোয়া ইউনিট চাইছে না কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও রকম প্রত্যক্ষ আলোচনায় বসুক দলের দিল্লির নেতারা। কারণ, কয়েক মাস পরেই গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন। আর সেখানে বিজেপি-র পাশাপাশি কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল। আর তাই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগে কংগ্রেসের ডাকা কোনও বৈঠক এড়িয়ে চলতে হচ্ছে দিল্লির তৃণমূল নেতাদের।