গিরিরাজ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
প্রোটেম স্পিকার কে হবেন তা নিয়ে গোড়া থেকেই সংঘাত বেধেছিল শাসক ও বিরোধী শিবিরে। শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব পেয়েছেন কটকের বিজেপি সাংসদ ভর্তৃহরি মহতাব। আজ সাংসদদের শপথ গ্রহণ করানোর জন্য ওড়িশার ভর্তৃহরি প্রোটেম স্পিকার হিসাবে আসনে বসতেই ‘জয় জগন্নাথ’ বলে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্য বিরোধী সাংসদেরা। মুহূর্তে বিরোধ উধাও। সব মিলিয়ে আজ একাধিক কোলাজের সাক্ষী থাকল অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম দিন।
বিজেপির এক সাংসদ শপথ নিতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পিছলে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়ায় তাঁকে ধরতে ছুটে এলেন এসপি সাংসদ অখিলেশ যাদব। আবার গত সরকারের কৃষিমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ শপথ নিতে আসতেই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরস মন্তব্য, “আপনার জন্যই পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের আসন বেড়েছে!” গিরিরাজের কাছেই যে আগের দফায় একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকা চেয়ে একাধিক বার দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল!
আজ নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ শপথ নিতে এলে তাঁদের সংবিধান তুলে ধরে দেখান বিরোধীরা। কিন্তু বিজেপির নিতিন গডকড়ী শপথ নিতে উঠতেই টেবিল চাপড়ে তাঁকে স্বাগত জানান প্রতিপক্ষের প্রধান সেনানী রাহুল গান্ধী, রাজনৈতিক শিবির যাকে বিজেপির মধ্যে বিভাজন তৈরির কৌশল হিসাবে দেখছে। প্রতিবার স্পিকারের টেবিলে একটি মাইক থাকে শপথ নেওয়ার জন্য। কিন্তু এ বারে স্পিকারের টেবিলের দু’প্রান্তে শাসক ও বিপক্ষ শিবিরের দিকে মাইকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা দেখে কল্যাণের বক্তব্য, “দু’দিকে মাইক রেখে শাসক ও বিপক্ষের বিভাজন স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যা অতীতে দেখা যায়নি।”
নতুন সংসদ ভবন এখনও অনেকের কাছেই ভুলভুলাইয়ার নামান্তর। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এ বারে তৃণমূলের হয়ে প্রথম বার জিতে এসেছেন একাধিক মহিলা সাংসদ। জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ, মিতালি বাগ, শর্মিলা সরকারদের আজ নতুন সংসদ ভবন, সেখানকার ক্যান্টিন, পুরনো সংসদ ভবনে দলীয় দফতর ঘুরিয়ে দেখানোর দায়িত্ব নেন কল্যাণ।
ঘটনাচক্রে, আজ জন্মদিন জুনের। জন্মদিনেই সংসদে পা দেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই উৎসাহিত জুন। যদিও পরিবারের লোকজন দিল্লিতে না থাকায় কিছুটা মনমরা। তবে সব কিছু ছাপিয়ে গিয়ে আজ প্রস্তুতি চলেছে আগামিকালের শপথ গ্রহণের। অধিকাংশ তৃণমূল সাংসদের বাংলায় শপথ নেওয়ার কথা। শপথের সেই খসড়া বানানোর পাশাপাশি পরিবারের সদস্যরা কী ভাবে কাল দর্শক গ্যালারিতে প্রবেশাধিকার পাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আনকোরা সাংসদেরা।