তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। ফাইল চিত্র।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের বকেয়া অর্থ ছাড়া নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে চলতি সংঘাত আজ রাজ্যসভায় উঠে এল। তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের তোলা রাজনৈতিক বঞ্চনার অভিযোগে জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি জানিয়েছেন, কোনও রাজ্যের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়নি। এ বিষয়ে যা নিয়ম রয়েছে, তা রাজ্য সরকারই পালন করেনি।
আজ রাজ্যসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে জহর বলেন, “রাজ্যকে প্রবল ভাবে বঞ্চনা করা হয়েছে। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গকে কানাকড়ি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র।” জবাবে নিরঞ্জন জ্যোতি উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “কেন্দ্র এ ব্যাপারে কোনও বৈষম্যমূলক আচরণ করে না। কিন্তু কিছু নিয়ম আছে যা প্রত্যেকটি রাজ্যকে মানতে হবে। ২০১৯ সালে একটি কেন্দ্রীয় দল পশ্চিমবঙ্গের একশো দিনের প্রকল্পের রূপায়ণের দিকটি দেখতে গিয়েছিল। তারা যে রিপোর্ট দেয়, তাতে স্পষ্ট, নিয়মের কারচুপি হয়েছে। এখনও সেই একই পরিস্থিতি।”
এর উত্তরে ফের উঠে দাঁড়িয়ে জহর বলেন, “রাজনৈতিক কারণে আমাদের সঙ্গে ভেদাভেদ করা হচ্ছে। মন্ত্রী অত্যন্ত বাড়িয়ে চড়িয়ে কথা বলছেন।” পরে তিনি দাবি করেন, “বলা হচ্ছে রাজ্য কেন্দ্রের সব প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। এটা মিথ্যা। আরও একটি অভিযোগ হল, তদন্তে কিছু অপব্যবহারের ঘটনা উঠে এসেছে। তাতে হয়তো মোট প্রাপ্য টাকার ১ শতাংশ মাত্র কমতে পারে। অথচ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১০০ শতাংশ! যারা দোষী তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে, সেই টাকা কেন্দ্রকে ফেরত দেওয়া হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী ১০০ শতাংশ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু টাকা আটকে রেখে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে।”
গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের প্রশ্নের উত্তরে লোকসভায় জানিয়েছিল, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া পাওনার পরিমাণ ৩২০২ কোটি টাকা। গত অগস্টে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে জানান, একশো দিনের কাজে রাজ্যের বকেয়া পাওনার পরিমাণ ৬৫৬১ কোটি টাকা। যা এখন ৭৫০০ কোটি টাকায় পৌঁছে গিয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি। মঙ্গলবার আবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসেবে অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া পাওনার পরিমাণ ৫৪৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে চলতি অর্থ বছরের বকেয়া ৪১৩৭ কোটি টাকা। তার সঙ্গে গত অর্থ বছরের পাওনা বাবদও ১৪৯৬ কোটি বকেয়া রয়েছে।