গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বাংলায় দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে তৃণমূল সরকারের অনুদান নিয়ে অহরহ সমালোচনা করে বিরোধীরা। এ বার বিজেপি শাসিত অসমে দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে রাজ্যের ৬,৯৫৩টি পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান প্রসঙ্গে অসমের পর্যটন মন্ত্রী জয়ন্ত বড়ুয়া বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভার সম্মতিক্রমে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ শুধু তাই নয়, মন্ত্রী তাঁদের বিশেষ কর্মসূচির কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি, পাঁচ দিন, পাঁচ রাত নির্দিষ্ট একটি করে গ্রামে থাকবেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। তার পর ৪০০টি নতুন বিদ্যালয় তৈরির শিলান্যাস হবে। পুরনো স্কুল ভবনগুলোর সংস্কারের জন্য ৭ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করেছে সরকার। এ ছাড়াও গুচ্ছ সরকারি প্রকল্প আসছে।’’
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে বাংলায় ক্ষমতায় আসার পরের বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্লাবগুলির পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য আর্থিক অনুদান ঘোষণা করেন। বাছাই করা ক্লাবগুলি প্রথম বছরে এককালীন ২ লাখ টাকা এবং পরবর্তী ৩ বছর ১ লাখ করে মোট পাঁচ লাখ টাকা পেত। যদিও কোভিড পর্বে, ২০২০ সাল থেকে এই প্রকল্পে অর্থ দেওয়ার কাজ স্থগিত রাখা হয়। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ওই অনুদান আর দেওয়া হবে না। হাই কোর্টও এই অনুদানের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। এই প্রেক্ষিতে অসম সরকারের অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যে বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘আমি যা শুনেছি তাতে, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে দুর্গাপুজোয় আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে। এখানে যেমন তৃণমূলের মালকিন নিজের ইচ্ছেমতো কাকে টাকা দেবেন ঠিক করেন, সেটা ওখানে হয় না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অসমের সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পান। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায় তাঁদের কাউকে মহার্ঘ ভাতার জন্য ‘ঘেউ-ঘেউ’ করতে হয় না। সুতরাং, অসম সরকার যা পারে বাংলার তৃণমূল সরকার তা পারে না।’’
অন্য দিকে, হিমন্ত সরকারের অনুদানের সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, ‘‘বিজেপির উচিত নাকখত দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়া। বাংলার সমস্ত প্রকল্পের অনুকরণ করে ওরা। আবারও ‘মমতা মডেল’-এর নকল হল। তাই মমতার সমালোচনার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত বিজেপির।”