সোমবার দিল্লির মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দফতরে যায় তৃণমূলের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনের আওতায় থাকা গুজরাত পুলিশ কী ভাবে গ্রেফতার করল সাকেত গোখলেকে? এমনটাই প্রশ্ন তুলে কমিশনের দ্বারস্থ হল তৃণমূল সংসদীয় দল। সোমবার দিল্লির মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দফতরে যায় তৃণমূলের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল। সেই প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন, উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়, দমদমের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়, শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল ও রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নুর।
বৈঠক শেষ করে সৌগত বলেন, ‘‘আমরা সাকেতের গ্রেফতারির প্রতিবাদে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। সেখানে আমরা জানিয়েছি, সাকেত একজন হার্ট পেশেন্ট। সে সব কথা মাথায় না রেখেই তাঁকে গ্রেফতার করা হল। সেই সময় তো রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নির্বাচন কমিশনের হাতে ছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘একই ঘটনায় দু’বার এফআইআর দায়ের হল। একবার আমদাবাদে ও দ্বিতীয়বার মোরবীতে। আর তাঁকে হয়রানির উদ্দেশ্যে যে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কমিশনের আওতাধীন পুলিশ কীভাবে এমনটা করতে পারে?’’
তৃণমূল সংসদীয় দলের দাবি, সাকেতকে গ্রেফতারির সময় বলা হয়েছিল, সেই টুইটটি ধারা ১২৫ উলঙ্ঘন করেছে। কিন্তু তাঁরা কমিশনকে জানিয়েছেন, কখনওই সাকেতের টুইটটি ওই ধারা উলঙ্ঘন করেনি। এ ছাড়াও নিজেদের প্রতিবাদপত্রে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও অভিনেতা তথা প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল। দমদমের প্রবীণ সাংসদ সৌগতর দাবি, সাকেতকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হলেও, হিমন্ত ও পরেশের মন্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। পরেশ তো আবার বাঙালি বিদ্বেষী মন্তব্য করেছিলেন। নির্বাচন কমিশন তাঁদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মোরবীর জেলা আদালত জামিন দিয়েছে তৃণমূলের মুখপাত্র সাকেতকে। গুজরাতের মোরবীতে সেতু বিপর্যয় নিয়ে একটি টুইট করার অভিযোগে গত মঙ্গলবার ভোররাতে রাজস্থানের জয়পুর বিমানবন্দর থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র সাকেতকে গ্রেফতার করেছিল গুজরাত পুলিশ। এর পর আমদাবাদের একটি আদালতে হাজির করানো হলে, শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এর পর শুক্রবার সাকেতের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। কিন্তু জামিনে মুক্তি পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গুজরাত পুলিশ তাঁকে ফের গ্রেফতার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছিলেন ডেরেক। তারপরেই তাঁর গ্রেফতারির বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল তাঁরা।