স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
বিশেষ অধিবেশনের শেষ দিন যখন অধিবেশন কক্ষ প্রায় ফাঁকা, ট্রেজারি বেঞ্চে বসে রয়েছেন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। তৃণমূল কংগ্রেসের বেঞ্চে তখন পাশাপাশি বসে দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী ৩ অক্টোবর গিরিরাজের সময় চেয়ে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। উদ্দেশ্য ওই সময়ে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গে বকেয়া আদায় নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বৈঠক করানো। অভিষেক সুদীপকে বলেন, গিরিরাজের কাছে গিয়ে তাঁকে বিষয়টি জানাতে, কারণ দলীয় চিঠির কোনও জবাব মন্ত্রক থেকে আসেনি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সুদীপ উঠে গিয়ে গিরিরাজের পাশে বসে তাঁর কাছে ৩ তারিখ সময় চান। বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। মন্ত্রী সুদীপকে বলেন, দল তাঁকে ছত্তীসগঢ়ে নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছে। সে কারণে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ তিনি পুরোটাই ওই রাজ্যে থাকবেন। সুদীপ বোঝান মমতার দেখা করাটা কেন রাজ্যের জন্য জরুরি। এই যোজনার আওতাভুক্ত মানুষেরা সীমাহীন সমস্যার মধ্যে পড়ছেন বলেও গিরিরাজকে জানান। সূত্রের খবর, এর পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, সুদীপের বক্তব্য তিনি ‘উপযুক্ত স্থানে’ জানাবেন। এ বিষয়ে তাঁর অভিমতও জানিয়ে দেবেন।
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, এই বৈঠক যে হবে তা নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, গোড়া থেকেই কেন্দ্র এই বকেয়া মেটানো নিয়ে ‘নেতিবাচক মনোভাব’ নিয়ে চলছে। এর আগে এপ্রিলে এই মন্ত্রীর ‘দর্শন’ চেয়েও মেলেনি। ১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে দিল্লির কৃষিভবনে যাওয়া তৃণমূল সাংসদরা কেন্দ্রীয় কৃষিসচিবের কাছেই তাঁদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দিয়েছিলেন।
এ দিনই নতুন ভবনে স্পিকারের ঘরে যান অভিষেক এবং সুদীপ। সংসদে দলীয় অফিস যাতে দ্রুত পাওয়া যায় তার দাবি করেন তাঁরা। এটাও জানান ২০১৪ সালে নতুন লোকসভা গঠনের পরে কতটা ভোগান্তি হয়েছিল তৃণমূলের ঘর পেতে। চার বছর তাঁদের সেন্ট্রাল হলে বসতে হয়। স্পিকার ওম বিড়লা তাঁদের জানিয়েছেন, এ বারে কোনও সমস্যা হবে না। আগামী তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তিনি তৃণমূলের জন্য দলীয় অফিস নির্দিষ্ট করে দেবেন। আজ সন্ধ্যায় ফের সুদীপকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। স্পিকার এ কথাও তাঁদের জানান, জি২০ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির দেওয়া নৈশভোজে তিনি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই টেবিলে বসেছিলেন। তাঁদের কথোপকথন হয়েছে। প্রসঙ্গত এই টেবিলে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।