—ফাইল চিত্র।
জয়ের আশা নেই। এটা বুঝেও কংগ্রেস রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে বিরোধী জোটের প্রার্থী দিতে চাইছে। কিন্তু তৃণমূল এতে রাজি নয়। তৃণমূলের যুক্তি, এই লড়াইয়ের কোনও গুরুত্ব নেই। তাতে বরং বিজেপিরই সুবিধা হয়ে যাবে। বিজেপি রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে নিজের প্রার্থীকে জিতিয়ে বিরোধী জোটকে হারানোর কৃতিত্ব নেবে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব ডিএমকের সাংসদ তিরুচি সিলভাকে বিরোধী জোটের প্রার্থী করতে চাইছে।
সনিয়া গাঁধী আজ সংসদের রণকৌশল ঠিক করতে সংসদীয় দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি বিরোধী জোটের প্রার্থী নিয়ে অন্য বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন। লোকসভায় থাকলেও রাজ্যসভায় বিজেপি তথা এনডিএ-র নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তা সত্ত্বেও সম-মনোভাবাপন্ন দলগুলিকে নিয়ে মোদী সরকারের এখন সংখ্যা জোগাড় করতে অসুবিধা হয় না। ভোটাভুটিতে হার হবে বুঝে কংগ্রেস নেতারা নিজের প্রার্থী না দিয়ে অন্য দলের কাউকে প্রার্থী করার কৌশল নেন। তৃণমূল বা অন্য দলের থেকে সাড়া না মেলায় ডিএমকের তিরুচি সিলভাকে প্রার্থী করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়। সূত্রের খবর, তিরুচি নিজেও তৃণমূল-সহ অন্য বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন।
তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘যে নির্বাচনের গুরুত্ব নেই, সেখানে আমরা প্রার্থী দিতে যাব না। কংগ্রেস আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনও আলোচনা করেনি। কোভিড পরিস্থিতির জন্য বাদল অধিবেশনে কত জন সাংসদ আসতে পারবেন, সেটাই স্পষ্ট নয়। আমাদের দলেরই ১৩ জন সাংসদ থাকবেন না। আমরা বিজেপির সঙ্গে সঠিক জায়গায় লড়াই করছি এবং করব। ভুল জায়গায় লড়ে
বিজেপিকে ফায়দা তোলার সুযোগ করে দেব না।’’
রাজ্যসভার বর্তমান ডেপুটি চেয়ারম্যান, জেডিইউ নেতা হরিবংশ এপ্রিলে অবসর নেওয়ায় ১৪ সেপ্টেম্বর বাদল অধিবেশনের শুরুর দিনেই ওই পদে নির্বাচন হবে। হরিবংশ ফের রাজ্যসভায় জিতে এসেছেন। বিজেপি তথা এনডিএ তাঁকে ফের জিতিয়ে আনতে চাইছে। দু’বছর আগেও ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে ভোটের সময় কংগ্রেস নেতৃত্ব এনসিপি-র বন্দনা চহ্বাণকে প্রার্থী করার ভাবনাচিন্তা করেছিল। কিন্তু এনসিপি শেষবেলায় পিছু হটায় কংগ্রেস নিজের দলের বি কে হরিপ্রসাদকে প্রার্থী করে। হরিপ্রসাদ ১০৫টি ভোট পেয়েছিলেন। হরিবংশ ১২৫টি ভোট পেয়ে তাঁকে হারান।
শুধু ডেপুটি চেয়ারম্যানের পদ নয়, লোকসভার ডেপুটি স্পিকার পদেও বিরোধী জোটের প্রার্থী দিতে চাইছে কংগ্রেস। নতুন লোকসভা গঠনের পর থেকেই ডেপুটি স্পিকার পদ খালি। রাজ্যসভাতেই অন্য বিরোধীরা রাজি না-হলে লোকসভায় বিজেপির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার মুখে কেউ রাজি হতে চাইবে না বলেই কংগ্রেসের আশঙ্কা।