লুইজ়িনহো ফেলেরো। ফাইল চিত্র।
‘দলীয় শৃঙ্খলা’ না মানার কারণেই গোয়ার লুইজ়িনহো ফেলেরোকে সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। নিয়ম ‘ভেঙে’ ফেলেরো তাঁর সাংসদ কোটার টাকা নিজের রাজ্য গোয়ায় খরচ করতে চেয়েছিলেন। অভিযোগ, এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ব্যক্তিগত ভাবে চিঠি দেন। দরবার করেন রাজ্যসভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছেও।
নিয়ম হল, কোনও সাংসদ তাঁর এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা অন্য রাজ্যে খরচ করতে পারেন না। ফেলেরো রাজ্যসভায় গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। সে ক্ষেত্রে তাঁর বরাদ্দ টাকা খরচ করার ক্ষেত্র এই রাজ্য। তৃণমূল সূত্রের খবর, গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়মের বাইরে যাওয়ার জন্য ‘বিশেষ অনুমোদন’ চেয়েছিলেন।
বাইরের রাজ্যে দলকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে তৃণমূল প্রথম ভোট লড়ে গোয়ায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তার মুখ্য উদ্যোক্তা। বাংলা থেকে দলে-দলে নেতা-মন্ত্রী বারবার সেখানে গিয়েছেন। একাধিক বার গিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই ফেলেরোর নেতৃত্বে তৃণমূল সেখানে রাজ্য সংগঠন তৈরি করে। তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়।
দলীয় নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছেন, গোয়ার নির্বাচনে সম্ভাবনা থাকলেও, তৃণমূল সেখানে দাগ কাটতে পারেনি। সে ক্ষেত্রে ফেলেরোর ‘ভূমিকা’ নিয়ে আলোচনা চলছিল দলের অন্দরে। রাজ্যসভায় পাঠানোর পরে বিধানসভায় লড়তে বলা হলে, তাতে রাজি হননি তিনি। এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগ করলে বিষয়টি বিশেষ মাত্রা পাওয়ার কারণ, তার ঠিক আগেই তৃণমূলের জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারানো।
দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্যসভায় নির্বাচিত ফেলেরো তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা গোয়ায় খরচ করতে বিশেষ অনুমতি চেয়ে যে চিঠি লিখেছেন, সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরেই রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায়ের মাধ্যমে তাঁকে ‘পদত্যাগ’ করতে নির্দেশ পাঠান অভিষেক। দল অনুশাসন সম্পর্কিত এই বিষয়টি সামনে আনবে না বুঝিয়ে ‘সম্মানজনক বিচ্ছেদে’র এই প্রস্তাব দেওয়া হয় তৃণমূলের তরফে।
তৃণমূলের এক শীর্ষনেতার দাবি, ভোটে দলের বিপর্যয়ের পরেও সাংগঠনিক কাজে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি ফেলেরো। তার পরে সাংসদ তহবিল খরচ নিয়ে ওই তৎপরতা জানার পরে মমতার নজরে আনা হয় বিষয়টি এবং এই ‘বিচ্ছেদে’র সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেরোকে পদত্যাগের নির্দেশ পাঠানো হয়।