গোমন্তকের সঙ্গে জোট গড়ে ভোটে লড়া তৃণমূলের কী হবে?
গোয়ার প্রাচীনতম আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি এ বার সেই রাজ্যের বিধানসভা গঠনের ক্ষেত্রে ‘কিং মেকার’ হতে পারে। ফলাফল ঘোষণার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে এমনই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। সোমবার সব বুথফেরত সমীক্ষাই ইঙ্গিত দিয়েছে, গোয়ায় ফলাফল ত্রিশঙ্কু হওয়ার সম্ভাবনা। সমীক্ষার ফল সব সময় মেলে না, তবে সমীক্ষার ফল দেখে কংগ্রেস এবং বিজেপি জয়ের দাবির পাশাপাশি বার্তা দিচ্ছে দীপক দাভলকরের এমজিপি-র উদ্দেশে। গোয়ায় সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ২১টি আসন। তিন বা চারটি কম পড়লে এমজিপি-র সঙ্গে সমঝোতার রাস্তা খুলে রাখতে চাইছে উভয় বড় দলই। সমীক্ষার হিসাব অনুযায়ী, চার বা পাঁচটি পর্যন্ত আসন পেতে পারে গোমন্তক পার্টি।
সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, ইতিমধ্যেই গোমন্তকের সঙ্গে জোট গড়ে ভোটে লড়া তৃণমূলের কী হবে? রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সেটা নির্ভর করছে তৃণমূল কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত ক’টি আসন পায় তার উপরে। এক বা দুইয়ের বেশি আসন পাওয়ার আশা তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট নেতৃত্বও করছেন না বলে খবর। তবে তৃণমূলের দাবি, তাদের সঙ্গে গোমন্তকের জোট ভোটের পরেও থাকবে।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাবন্ত আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভোট পরবর্তী কৌশল এবং পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লি এসেছেন। তার আগেই তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই এমজিপি-র সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেছেন। যদি কোনও কারণে গেরুয়া বাহিনী একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পায়, তারা এমজিপি-র সমর্থন চাইবে। আবার গোয়া কংগ্রেস কমিটির প্রধান দীনেশ গুন্ডুরাও বলছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে তাঁরা এমজিপি, তৃণমূল এমনকি আপ-এর সমর্থন চাওয়ার জন্য প্রস্তুত। এক পা এগিয়ে কংগ্রেস নেতা মাইকেল লোবো বলেছেন, সে রকম হলে এমজিপি-কে সরকারে শামিল করতেও তারা প্রস্তুত।
গোয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা পি চিদম্বরম এখন গোয়ায়। তাঁর কথায়, “কংগ্রেসের সঙ্গে এমজিপি-র কথাবার্তা চলছে। আমরা ওদের মনে করিয়ে দিচ্ছি ২০১৭ এবং ১৯-র মতো ভুল যেন ওরা আর না করে। সে সময় এমজিপি-কে লোভ দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে একটা অংশকে আত্মসাৎ করেছিল বিজেপি। অন্য অংশকে তারা তাড়িয়ে দেয়।”
চিদম্বরম এ-ও জানিয়েছেন তাঁর দল নিজেদের দুর্গ দ্বিগুণ সতর্কতার সঙ্গে পাহারা দিচ্ছে। ২০১৭ সালে গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনের কথা তুলে ধরে এবং বিজেপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, “যে পার্টি ঘোড়া কেনাবেচা করে, তারা এখনও রয়েছে। আমরা যথেষ্ট সচেতন কেউ যেন ভোট চুরি করতে না পারে।” সূত্রের জল্পনা, কংগ্রেসের প্রার্থীদের পাহারা দেওয়ার জন্য গোয়া থেকে নিয়ে যাওয়া হবে রাজস্থানে। সেখানে তাঁদের রাখা হবে একটি রিসর্টে। তবে এ সব গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন চিদম্বরম। এনসিপি-র গোয়ায় কোনও আসনের সম্ভাবনা না থাকলেও সূত্রের খবর, ফলাফল ঘোষণার পর শরদ পওয়ার সে রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী জোট তৈরি করতে সক্রিয় হতে পারেন।