Nicholas McCaffrey

বঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগ চায় না কেন্দ্র! অস্ট্রেলীয় কর্তার সঙ্গে বৈঠকে বাধার পর অভিযোগ তৃণমূলের

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় করের টাকার ন্যায্য ভাগ না দেওয়া, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার পরে পশ্চিমবঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগ আটকাতে সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ০৮:০২
Share:

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নিকোলাস ম্যাকাফের সঙ্গে আজ পশ্চিমবঙ্গের তিন মন্ত্রীর বিনিয়োগ সংক্রান্ত বৈঠক নরেন্দ্র মোদী সরকার চক্রান্ত করে আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় করের টাকার ন্যায্য ভাগ না দেওয়া, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার পরে পশ্চিমবঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগ আটকাতে সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্র। একে ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ বলে ব্যাখ্যা করে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, বিদেশি বিনিয়োগ যাতে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যেই যায়, তা নিশ্চিত করতে ওই বৈঠক ভেস্তে দেওয়া হয়েছে। যদিও বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। গোটাটাই প্রোটোকলের বিষয়।

গত দশ বছরে একাধিক বিষয়ে বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আজ দিল্লিতে তৃণমূলের দুই রাজ্যসভার সাংসদ, সাকেত গোখলে ও সাগরিকা ঘোষ অভিযোগ করেছেন, সুন্দরবন-সহ রাজ্যের একাধিক স্থানে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা
করতে আজ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজার সঙ্গে বৈঠক করার অনুমতি চেয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিদলটি।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নিকোলাস ম্যাকাফ। ছবি: সংগৃহীত।

সাকেত বলেন, ‘‘কিন্তু বিদেশ মন্ত্রকের ওশানিয়া শাখার তরফে ডেপুটি হাইকমিশনারের কাছে একটি বার্তায় রাজ্যের তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই পরামর্শ পাঠানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রোটোকল শাখাকেও।’’

তৃণমূল সূত্রের দাবি, রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে আপত্তি জানালেও, বিজেপি নেতা
সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, তৃণমূলের জহর সরকার, ডেরেক ও’ব্রায়েনদের সঙ্গে ওই বিদেশি প্রতিনিধিদলের বৈঠক নিয়ে আপত্তি জানায়নি মন্ত্রক।

তৃণমূল নেতৃত্বের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় সরকার যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ আনার কথা বলছে, সেখানে কেন একটি রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে বাধা দিচ্ছে কেন্দ্র! সাগরিকার মতে, ‘‘এখানেও বাংলার প্রতি বিজেপির বঞ্চনার মনোভাব ফুটে উঠেছে। মোদী পশ্চিমবঙ্গে হেরে যাওয়াতেই এখন শোধ নিচ্ছেন।’’

গোখলের দাবি, ‘‘কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের বলে দেওয়া হচ্ছে, যদি বিনিয়োগ সুষ্ঠু ভাবে করতে চান, গুজরাতে করুন।’’ সাগরিকা বলেন, ‘‘শুধু বিদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন বার বিদেশ যাত্রা আটকেছে এই সরকার। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার উপরে আক্রমণ।’’ আগামী সপ্তাহে সংসদের অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, এটা কোনও ভাবেই ঘরোয়া রাজনীতির বিষয় নয়। অস্ট্রেলিয়া ভারতকে যতটা কূটনৈতিক মর্যাদা দিয়ে থাকে, ভারতও বিনিময়ে ততটাই দেয়। যেমন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের সে দেশ বা রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার ‘প্রোটোকল’ নেই। ফলে ভারতও অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনারকে সেই সুবিধা দিতে পারেনা। তবে সাংসদদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনারের বৈঠক করার প্রশ্নে কোনও বাধা নেই বলে জানিয়েছে মন্ত্রক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement