TMC

TMC and AAP: আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ‘হাত’কে ছাড়াই জোটের কৌশল তৃণমূল-আপের

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সর্বসম্মত প্রার্থী হিসাবে অ-কংগ্রেসি কোনও নেতাকে দাঁড় করাতে সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির (আপ) মতো দল।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২২ ০৬:১০
Share:

মমতা ও কেজরীবাল

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সর্বসম্মত প্রার্থী হিসাবে অ-কংগ্রেসি কোনও নেতাকে দাঁড় করাতে সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির (আপ) মতো দল। রাজনৈতিক সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

এখনও প্রকাশ্যে না এলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে। সর্বসম্মত প্রার্থী বাছাই করে বিজেপির বিরুদ্ধে চোখে পড়ার মতো লড়াই দেওয়াটাই উদ্দেশ্য সব বিরোধী দলের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের প্রার্থীতে নারাজ তৃণমূল, আপ। গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থীকে (মীরা কুমার) দাঁড় করানো হয়েছিল। বিরোধীদের পক্ষে উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী ছিলেন অ-কংগ্রেসি গোপাল গান্ধী। সূত্রের খবর, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব চান না, এ বারেও একই ভাবে কংগ্রেসের প্রার্থীকেই সর্বসম্মত ভাবে বিরোধীরা বেছে নিন। সূত্রের বক্তব্য, প্রার্থী বাছাইয়ের এই রণনীতিতে তৃণমূল এবং আপ পাশে পাবে টিআরএস, এসপি-র মতো দলগুলিকেও।

সম্প্রতি বিচারপতিদের আলোচনাসভায় যোগ দিতে এক দিনের সফরে দিল্লি এসেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য কোনও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক না করলেও দীর্ঘদিন পরে আপ নেতা তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে আলোচনা হয় মমতার। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ওই বৈঠকে উঠে এসেছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সম্ভাব্য কৌশল।

Advertisement

এই মুহূর্তে কংগ্রেসের প্রবল প্রতিপক্ষ আপ। পঞ্জাবে কংগ্রেসকে ধরাশায়ী করে জেতাই শুধু নয়, হরিয়ানাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতে কোমর বেঁধে নেমেছেন কেজরীওয়াল। অন্য দিকে তৃণমূলের যে কংগ্রেসের প্রতি ‘অ্যালার্জি’ রয়েছে, তা সুবিদিত। পশ্চিমবঙ্গে বিপুল ভাবে বিজেপিকে হারানোর পর তৃণমূল নেতৃত্ব জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধিতার ব্যাটন সনিয়া গান্ধীর হাতে তুলে দিতে ঘোর অনিচ্ছুক। গোয়ার ভোটে কংগ্রেসকে তীব্র নিশানা করেছেন মমতা। গোয়ায় একাধিক কংগ্রেস নেতা যোগ দিয়েছেন তৃণমূল শিবিরে। পাশাপাশি মেঘালয়ের ১২ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে মুকুল সাংমা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। সুস্মিতা দেব, রিপুন বরার মতো নেতারা কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন মমতার ডাকে। স্বাভাবিক ভাবেই সনিয়ারও তিক্ততা বেড়েছে তৃণমূল প্রসঙ্গে।

প্রশ্ন হল তৃণমূল, আপ বা এসপি চাইলেও, রাষ্ট্রপতি ভোটে বিরোধীদের সর্বসম্মত প্রার্থী হিসাবে কোনও অ-কংগ্রেসিকে সমর্থন করবে কি না ডিএমকে, শিবসেনা বা এনসিপি-র মতো দল, যাদের রাজ্য সরকার চলছে কংগ্রেসের সমর্থনে। কংগ্রেসও হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। সূত্রের বক্তব্য, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার যদি প্রার্থী হতে রাজি থাকেন, তা হলে কোনও বিরোধী দলেরই আপত্তি করার প্রশ্ন উঠবে না। প্রবীণ এই নেতার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং উচ্চতার কথা বিবেচনা করে তৃণমূল থেকে কংগ্রেস সবাই সমর্থন করবে। কিন্তু হারের সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত জেনেও পওয়ার কেন লড়বেন? এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ বলছে, সমস্ত বিরোধী দলের সমর্থন পাশে পাওয়াটাই এখানে লক্ষ্য, পরাজয় অবধারিত জেনেও। রাষ্ট্রপতি ভোটের মঞ্চে পওয়ার যদি সমস্ত বিরোধী দলের সমর্থন পান, ২০২৪-এর ভোটে তাঁর কেন্দ্র-বিরোধী জোটে বড় ভূমিকা নিতে সুবিধা হবে।

Advertisement

যদি পওয়ার না দাঁড়ান, সেই ক্ষেত্রেও কংগ্রেস শিবিরের বাইরের কোনও রাজনৈতিক নেতা বা অরাজনৈতিক (প্রয়াত এ পি জে আব্দুল কালামের মতো) ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী হিসাবে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা থাকবে তৃণমূলের। সম্প্রতি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়েক স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি বিরোধীদের সঙ্গে জোট বেঁধে রাষ্ট্রপতি ভোটে লড়বেন না। রাজনৈতিক সূত্র আরও এক পা এগিয়ে বলছে, নবীনের বিজেডি এবং জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর— এই দু’টি দল বিজেপির প্রার্থীকেই ভোট দেবে। তাই এঁদের বাদ দিয়েই যাবতীয় অঙ্ক কষছেন বিরোধীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement