(বাঁ দিকে) অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং সঞ্জয় সিংহ। — ফাইল চিত্র।
তিহাড় জেলে যাওয়ার পরেই নাকি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের চার কেজিরও বেশি ওজন কমেছে, এমনই দাবি করেছিল আম আদমি পার্টি (আপ)। যদিও জেল কর্তৃপক্ষ সেই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। এ বার তাঁদের কথার যুক্তি দিতে গিয়ে তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ টেনে আনলেন আপ নেতা সঞ্জয় সিংহের মেডিক্যাল রিপোর্ট। সেখানে দাবি করা হয়েছে, জেলে স্বাস্থ্যের অবনতি হয়নি সঞ্জয়ের। বরং তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। বেড়েছে ওজনও।
দিল্লি সরকারের আবগারি নীতি বদলের জন্য বেআইনি অর্থ লেনদেনে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৪ অক্টোবর সকালে থেকেই আপের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয়ের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল ইডি। বিকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর পর দু’দফায় তাঁকে ইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল রাউস অ্যাভিনিউ বিশেষ আদালত। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল তিহাড় জেলে।
সেই থেকে গত ছ’মাস তিহাড়ই ছিল সঞ্জয়ের ঠিকানা। তবে গত ২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। ৩ এপ্রিল তিহাড় থেকে বেরিয়ে আসেন আপের রাজ্যসভা সাংসদ। এই ছ’মাসে সঞ্জয়ের মেডিক্যাল রিপোর্টকে সামনে রেখে জেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, জেলবন্দি থাকাকালীন সঞ্জয়ের ওজন ছ’কেজি বেড়েছে।
জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সঞ্জয়ের ওজন ৭৬ কেজি থেকে বেড়ে ৮২ কেজি হয়েছে। তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রাও কমেছে কিছুটা। উল্লেখ্য, জেলে থাকাকালীন আপ নেতা অভিযোগ করেছিলেন, তিনি বিশুদ্ধ পানীয় জল, সঠিক খাবার এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার মতো মৌলিক সুবিধাগুলি পাচ্ছেন না।
তা নিয়ে দিল্লির নিম্ন আদালতে মামলাও করেন সঞ্জয়। মার্চ মাসে তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে আদালত জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়, সঞ্জয়কে যেন স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বোতলজাত পানীয় জল সরবরাহ করার কথা বলে আদালত। সেই নির্দেশ মোতাবেক সঞ্জয়ের খাদ্যতালিকা তৈরি করেন তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, দিল্লির আবগারি মামলায় কেজরীওয়ালকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আপাতত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিহাড় জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। আপ প্রধান জেলে যাওয়ার পরে আপের তরফে দাবি করা হয়েছিল, জেলের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তাঁর ওজন কমে গিয়েছে প্রায় ৪.৫ কেজি। তবে তিহাড় কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আপাতত সুস্থই রয়েছেন কেজরীওয়াল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর রক্তে শর্করার মাত্রা নিরীক্ষণ করার জন্য সেন্সর বসানো হয়েছে। শরীরে শর্করার পরিমাণ যাতে হঠাৎ করে খুব কমে না যায়, তার জন্য লজেন্সও দেওয়া হয়েছে। জেলের চিকিৎসকদের নিয়মিত নজরদারিতে রয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি, আপপ্রধানকে দুপুরে এবং রাতে বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।