প্রতীকী ছবি।
উত্তরপ্রদেশের বহরাইচে যখন মানুষখেকো নেকড়ের হামলায় ত্রস্ত, এ বার রাজ্যের আরও একটি জেলায় বাঘের আতঙ্ক বাড়েছে। গত এক মাসে লখিমপুর খেরি জেলায় বাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছে চার জনের। আহতের সংখ্যাও কম নয়। একের পর এক হামলায় আতঙ্কিত দুধওয়া ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের সংলগ্ন ৫০টি গ্রাম।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক দিন আগেই বছর পঁয়তাল্লিশের এর ব্যক্তির আধখাওয়া দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের নাম রাজেশ কুমার। গরুর খাবার আনতে বাইরে বেরিয়ে ছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁর উপর বাঘ হামলা করে। বাঘে টেনে নিয়ে যায় তাঁকে। পরদিন কাছেই একটি আখক্ষেত থেকে রাজেশের আধখাওয়া দেহ উদ্ধার হয়। জুলাইয়ের শেষ থেকে এখনও পর্যন্ত বাঘের হামলায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।
রাজেশ কুমারের উপর বাঘের হামলার ঘটনার পর ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের আশপাশের ৫০টি গ্রামে আতঙ্ক ছড়ায়। বন দফতর হামলাকারী ওই বাঘটিকে ধরার চেষ্টা করে। কিন্তু সেটির কোনও হদিস মেলেনি। তার মধ্যেই অগস্টের শুরু থেকেই বাঘের হামলা হয় বেশ কয়েক বার। পৃথক পৃথক ঘটনায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। রাজেশ ছাড়াও আরও তিন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। বাঘের হামলায় আতঙ্ক তো বাড়ছেই, সেই সঙ্গে গ্রামগুলিতে ক্ষোভও বাড়ছে বন দফতরের বিরুদ্ধে।
লখিমপুর খেরির সাউথ ফরেস্ট ডিভিশনের বনাধিকারিক সঞ্জায় কুমার বিসওয়াল জানিয়েছেন, দুধওয়া সংরক্ষণ কেন্দ্রে ১৬০টি বাঘ রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি লোকালয়ে চলে আসে। যার জেরেই এই ঘটনা ঘটছে মাঝেমধ্যেই। রাজ্যের বনমন্ত্রী অরুণ কুমার লখিমপুর খেরিতে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি, হামলাকারী বাঘটিকে দ্রুত ধরার জন্য নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু মন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও আতঙ্ক কাটছে না গ্রামগুলির।
রাজ্যের আর এক জেলা বহরাইচে গত দেড় মাস ধরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষখেকো নেকড়ের দল। এই সময়ের মধ্যে নেকড়ের দলের শিকার হয়েছে ছয় শিশু-সহ সাত জন। দলে ছ’টি নেকড়ে রয়েছে। নেকড়ের হামলায় আতঙ্ক বাড়ছে বহরাইচ জেলার মাহসি ব্লকের সিসিয়া পঞ্চায়েত এবং আশপাশের অঞ্চলগুলিতে। প্রাণীগুলিকে ধরতে ইতিমধ্যেই ২২টি দল গড়েছে উত্তরপ্রদেশ বন দফতর। বনকর্মীদের পাশাপাশি সেই দলে আছেন নিশানায় দক্ষ শিকারি এবং বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞেরা। রয়েছে ড্রোন, নাইট ভিশন্স-সহ নানা আধুনিক সরঞ্জাম।