আর্তি: গোরক্ষকদের তাণ্ডব। পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন নিহতের আত্মীয়েরা। ছাপরায়। পিটিআই
গো-রক্ষার নামে দেশ জুড়ে তাণ্ডব অব্যাহত। গরুচোর সন্দেহে বিহারের সারনে আজ তিন জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। ওই ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত আজ ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ। সারন জেলার বানিয়াপুরে গ্রামের বাসিন্দারা দেখেন একটি পিকআপ ট্রাকে তিন জন রয়েছেন। ওই ট্রাকে একটি বাছুর ছিল বলে অভিযোগ। তাই দেখে
গ্রামবাসীদের একটা বড় অংশের সন্দেহ হয়, ওই তিন জন গরু পাচারকারী। এর পর এক দল উত্তেজিত লোক লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হয় ওই তিন জনের উপর। বেধড়ক মারধরে ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তাঁরা। অচেতন অবস্থায় তিন জনকে ছাপরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার খবর পাওয়ার পরই ছাপরা হাসপাতালে পৌঁছে যান নিহতের পরিজনেরা। পুলিশকর্মীদের কাছে সুবিচার চেয়ে কান্নাকাটি করতে দেখা যায় তাঁদের। এক পুলিশকর্মীর পায়ে মাথা রেখে কাঁদতে দেখা যায় নিহতের এক
আত্মীয়াকে।
গণপিটুনির খবর পাওয়ার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি সপ্তাহে বানিয়াপুর গ্রামে বেশ কয়েকটি পশু চুরির ঘটনা ঘটেছে। ফলে ক্ষিপ্ত ছিলেন গ্রামবাসীরা। ওই তিন জনকে গরুচোর সন্দেহ হওয়া মাত্রই মারধর শুরু হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতেরা বানিয়াপুরের পাশের গ্রামের বাসিন্দা। নিহতের পরিজনেরা বানিয়াপুরের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। গরু চুরির অভিযোগও দায়ের হয়েছে থানায়। পুলিশ সূত্রের খবর, নিহতদের মধ্যে এক জন পেশায় ব্যবসায়ী। নিহতেরা অতীতে কোনও ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিলেন কি না, তা খতিয়ে
দেখছে পুলিশ।
চলতি মাসের ২ তারিখ ত্রিপুরার ঢালাই জেলার রাইশ্যাবাড়ি গ্রামে গরুচোর সন্দেহে বুধি কুমার নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। গত ১৮ জুন ঝাড়খণ্ডের খারসওয়া গ্রামে চোর সন্দেহে তবরেজ আনসারি (২৪) নামে এক ব্যক্তিকে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে মারধর করে এলাকাবাসী। তার আগে তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘জয় হনুমান’ স্লোগান দিতে বাধ্য করেছিল হামলাকারীরা।