—প্রতীকী চিত্র।
মানব পাচার মামলায় বাংলা থেকে মোট তিন জনকে গ্রেফতার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীদের ধরতে ১০টি রাজ্যের মোট ৫৫টি এলাকায় হানা দেন এনআইএ-র আধিকারিকেরা। মোট ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তিন জন।
এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বারাসতের ব্যবসায়ী সঞ্জীব দেব। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে তাঁর বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সঞ্জীবকে। বারাসতের নবপল্লী এলাকায় সঞ্জীবের ফ্ল্যাট ঘিরে ফেলেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। কয়েক লক্ষ টাকা সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর।
এ ছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার হাজরাতলা এলাকায় বিকাশ সরকারের বাড়িতেও বুধবার তল্লাশি চালায় এনআইএ। বেশ কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিকাশ বাংলাদেশের বাসিন্দা। গাইঘাটায় ভাড়াবাড়িতে থাকছিলেন। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, বিকাশ কয়েক বছর আগেই বাংলায় এসেছিলেন। চিকিৎসা করাতে তিনি নিজে এসেছেন কিছু দিন আগে। ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় দেশে ফিরতে পারেননি। এনআইএ সূত্রের খবর, বাংলা থেকে রাজু রুদ্র নামের আরও এক জনকে মানব পাচার সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
এনআইএ বুধবার বাংলা ছাড়াও ত্রিপুরা, অসম, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, হরিয়ানা, রাজস্থান, জম্মু ও কাশ্মীর এবং পুদুচেরির বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে অসম পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া একটি অভিযোগ থেকে মানব পাচারচক্রের হদিস পান তদন্তকারীরা। এই চক্রের মাধ্যমেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীরা দেশে ঢুকছেন বলে অভিযোগ। তার পর তাঁরা ছড়িয়ে পড়ছেন দেশের নানা প্রান্তে। চলতি মাসে এই মামলা এনআইএ-র হাতে যায়।
বুধবারের তল্লাশি অভিযানের পর দেশের নানা প্রান্ত থেকে এনআইএ নগদ প্রায় ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে। অনেক মোবাইল ফোন, সিম কার্ড এবং পেন ড্রাইভ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মিলেছে একাধিক ভুয়ো আধার এবং প্যান কার্ড। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে তদন্তকারী সংস্থা। ৪,৫৫০ ডলার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এনআইএ জানিয়েছে, মানব পাচার মামলায় ত্রিপুরা থেকে ২১ জন, কর্নাটক থেকে ১০ জন, অসম থেকে পাঁচ জন, তামিলনাড়ু থেকে দু’জন এবং পুদুচেরি, তেলঙ্গানা ও হরিয়ানা থেকে এক জন করে গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট বিচারবিভাগীয় আদালতে হাজির করানো হবে।