নাগরোটায় জইশ জঙ্গিদের আটক হওয়া সেই ট্রাক। ফাইল চিত্র।
জম্মু-কাশ্মীরের নাগরোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিয়ে পাক হাইকমিশনারকে শনিবার ডেকে পাঠাল নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, সীমান্তে সন্ত্রাস নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে ভারত দাবি জানিয়েছে, জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ করুক পাকিস্তান। সঙ্গে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, দেশের নিরাপত্তাকে সুরক্ষিত রাখতে যা যা পদক্ষেপ করা প্রয়োজন ভারত তাই করবে।
এ দিনই ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করা হয়, নিহত জইশ জঙ্গিদের কাছ থেকে যে ফোন, ওষুধ এবং বেশি কিছু জিনিস উদ্ধার হয়েছে, তা থেকে স্পষ্ট যে জঙ্গিরা পাকিস্তানেরই। যদিও ওই ৪ জঙ্গির সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পর এই প্রথম জম্মু-কাশ্মীরে ভোট হতে চলেছে। ২৮ নভেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানে আট দফায় জেলা উন্নয়ন পর্ষদের ভোট হবে। গোয়েন্দারা আগেই সতর্ক করেছিল, এই ভোট বানচাল করতে ছক কষছে জঙ্গিরা। তার আগেই নাগরোটায় ৪ জইশ জঙ্গিকে খতম করে বড়সড় সাফল্য পেয়েছে সেনা।
গোয়েন্দাদের দাবি, নিহত জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ডিজিটাল মোবাইল রেডিও। তাতে ‘মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স’ নামে একটি সংস্থার নাম রয়েছে। যা পাকিস্তানের বলেই দাবি গোয়েন্দাদের। শুধু তাই নয়, মোবাইলে যে ধরনের কথোপকথন পাওয়া গিয়েছে তা থেকে স্পষ্ট পাকিস্তান থেকেই গোটা বিষয়টি পরিচালিত হচ্ছিল। মোবাইল বার্তায় ছিল—‘কত দূর পৌঁছেছো। এলাকার হালচাল কী? আশা করি সব ঠিকই আছে’। এই বার্তা চালাচালি হয় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের শাকারগড় থেকে।
গোয়েন্দারা আরও জানিয়েছেন, জঙ্গিদের কাছ থেকে যে স্মার্টফোন উদ্ধার হয়েছে তা পাকিস্তানের সংস্থা ‘কিউ মোবাইল’-এর। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ওষুধ এবং জুতোও পাকিস্তানে তৈরি। জঙ্গিরা যে পাকিস্তানের তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসগুলো এই দাবিকে আরও জোরালো করছে বলেই মত গোয়েন্দাদের।
বৃহস্পতিবার গোয়েন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে নাগরোটার কাছে বান টোল প্লাজায় একটি ট্রাক থামান জওয়ানরা। সঙ্গে সঙ্গেই ট্রাকের ভিতর থেকে গুলি চালানো শুরু হয়। নিরাপত্তাবাহিনীর পাল্টা গুলিতে নিহত হয় চার জইশ জঙ্গির। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
বস্তুত শুক্রবার, নাগরোটার এই ঘটনার পরই জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদী বলেন, “সেনাদের সাহসিকতার জন্যই জম্মু-কাশ্মীরে তৃণমূল স্তরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর আঘাত রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।”