১৬ এপ্রিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল চেন্নাই বিমানবন্দর। —ফাইল চিত্র।
একটা ই-মেলে কেঁপে উঠেছিল তিন-তিনটে এয়ারপোর্ট। বিমান অপহরণের আশঙ্কায় কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল মুম্বই, চেন্নাই এবং হায়দরাবাদের বিমানবন্দর। বিশেষ অভিযানে নেমেছিল সিআইএসএফ। যে কোনও মুহূর্তে অভিযানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে বলা হয়েছিল কম্যান্ডো বাহিনী এনএসজি-কে। শেষ পর্যন্ত কোনও অঘটন ঘটেনি ১৬ এপ্রিল। কিন্তু বিষয়টির তদন্তে নেমে জানা গেল, বিমান অপহরণের কোনও ছকই ছিল না। গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে গোয়া যাওয়া এড়াতে নাকি অপহরণের ভুয়ো গল্প ফেঁদেছিলেন হায়দরাবাদের এক যুবক!
যাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো গল্প ফাঁদার অভিযোগ, তাঁর নাম এম ভমশি কৃষ্ণ, দাবি টাস্ক ফোর্সের। কৃষ্ণ হায়দরাবাদের মিয়াপুরের বাসিন্দা, পেশায় পরিবহণ ব্যবসায়ী। টাস্ক ফোর্স সূত্রের খবর, কৃষ্ণ বিবাহিত, তাঁর একটি মেয়েও রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে চেন্নাইয়ের এক তরুণীর সঙ্গে নাকি কৃষ্ণর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই তরুণী নাকি মুম্বই হয়ে গোয়া যেতে চেয়েছিলেন এবং কৃষ্ণকে মুম্বই যাওয়ার ফ্লাইটের টিকিট কেটে দিতে বলেছিন। কিন্তু তরুণ পরিবহণ ব্যবসায়ীর কাছে নাকি টাকা ছিল না। তাই মুম্বই পুলিশের দফতরে ভুয়ো মেল পাঠিয়ে বিমান অপহরণের গল্প ফেঁদেছিলেন তিনি, বলছে টাস্ক ফোর্স।
বিমান অপহরণের আশঙ্কায় গোটা দেশে চাঞ্চল্য ছড়ানোয়, ভেস্তে গিয়েছিল মুম্বই-গোয়া যাওয়ার পরিকল্পনা। —ফাইল চিত্র।
১৬ এপ্রিল চেন্নাই থেকে থেকে নাকি মুম্বই যাওয়ার কথা ছিল কৃষ্ণর বান্ধবীর। একই দিনে হায়দরাবাদ থেকে মুম্বই পৌঁছনোর কথা ছিল কৃষ্ণর। ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় একটি ভুয়ো টিকিট বানিয়ে কৃষ্ণ তা গার্লফ্রেন্ডকে মেল করেন বলে দাবি টাস্ক ফোর্সের। একই সন্ধ্যায় মুম্বই পুলিশের দফতরেও মেল পাঠিয়ে দেন কৃষ্ণ। তবে নিজের নামে নয়, পুলিশকে বেনামে মেল করেন তিনি। এক জন মহিলা হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে কৃষ্ণ মুম্বই পুলিশকে জানান, একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে তিনি ৬ জনকে বিমান অপহরণের বিষয়ে আলোচনা করতে শুনেছেন। মুম্বই, চেন্নাই এবং হায়দরাবাদ থেকে একসঙ্গে বিমান অপহরণ করা হবে বলে তারা আলোচনা করছিল। এই মেল পেয়েই মুম্বই পুলিশ দেশের বিমানবন্দরগুলির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনী সিআইএসএফ-কে সতর্ক করে। ফলে তিন বিমানবন্দরেই ১৬ এপ্রিল চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়।
আরও পড়ুন: ফের পরীক্ষায় বসানোর শর্ত হিসেবে ছাত্রীর সঙ্গে ‘রাত কাটাতে’ চাইলেন শিক্ষক!
তিন বিমানবন্দর থেকে একসঙ্গে বিমান অপহৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এ খবরে ১৬ এপ্রিল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল গোটা দেশে। এম ভমশি কৃষ্ণর বান্ধবীও আর চেন্নাই বিমানবন্দরের দিকে যাননি, বাতিল করে দিয়েছিলেন মুম্বই-গোয়া ট্রিপ। কৃষ্ণর ছক সফল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিমান অপহরণে আশঙ্কা প্রকাশ করে যে ই-মেল মুম্বই পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছিল, সেই ই-মেলের শিকড় খুঁজতে গিয়ে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে টাস্ক ফোর্সের কাছে। শেষ রক্ষা আর করতে পারেননি কৃষ্ণ।