ছবি: পিটিআই।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবে সিপিএমের জনজাতি সংগঠন ‘ত্রিপুরা উপজাতি গণমুক্তি পরিষদ’। সংগঠনটির সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরী রবিবার এই কথা জানান। তাঁর বক্তব্য, কোনও জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, নতুন নাগরিকত্ব আইনের ফলে ত্রিপুরার উত্তর-পূর্ব অংশে যাতে জনবিস্ফোরণ না-ঘটে, সে কারণেই আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা।
জিতেন্দ্রর অভিযোগ, বিজেপি দেশকে হিন্দুরাষ্ট্র বানানোর জন্য এবং ক্ষমতায় টিকে থাকতে সারা দেশে বিবাদ লাগানোর চেষ্টা করছে। তাঁর আশা, শীর্ষ আদালতে আইনটি বাতিল হয়ে যাবে। দেশে-বিদেশে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। দেশের একটি আইনকে ঘিরে গোটা উপমহাদেশে এতটা প্রতিক্রিয়া সম্ভবত এই প্রথম।জিতেন্দ্র জানাচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্টে তাঁরা তাঁদের আশঙ্কাগুলি তুলে ধরবেন। আশঙ্কা কী নিয়ে?
সিপিএমের জনজাতি সংগঠনের নেতাটির বক্তব্য, বিভিন্ন সময়ে পরিস্থিতি বাধ্য করেছিল বলেই অন্য দেশ বা জায়গা থেকে মানুষ শরণার্থী হিসেবে ত্রিপুরায় এসেছেন। কিন্তু এখন তো দেশভাগের মতো কোনও পরিস্থতি হয়নি! তবু এই আইন করে বিজেপি দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র বানিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে। এই আইন বাংলাদেশের প্রায় পৌনে দু’কোটি হিন্দুকে অনিশ্চিয়তার মধ্যে ঠেলে দেবে। ত্রিপুরা সবচেয়ে কাছে হওয়ায়, ও-পার থেকে এ রাজ্যেই শরণার্থী আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এতে রাজ্যের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তা ছাড়া, এই আইন চালু হলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ফের উগ্রপন্থা মাথা চাড়া দিতে পারে।
আরও পড়ুন: নয়া নাগরিকত্ব আইন সাভারকরের মতের বিরোধী: উদ্ধব
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেবের সমালোচনা করে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার নানা মেলার উদ্বোধনে ব্যস্ত।’’ সিপিএমের জনজাতি সংগঠনটির সম্পাদক রাধাচরণ দেববর্মা নিশানা করেন, বিজেপি-শরিক আইপিএফটিকে। তাঁর কথায়, ‘‘জনজাতি-ভিত্তিক দলটি ওই আইন মানছে না। আবার সরকারেও রয়েছে। এটা স্পষ্ট দ্বিচারিতা।’’
এই আইনের বিরুদ্ধে উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর মহকুমাতে নাগরিক মঞ্চ গত ১২ তারিখ থেকে দফায় দফায় বন্ধ করছে। মহকুমার বাসিন্দাদের দাবি, রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে ফেরা নিশ্চিত করতে হবে। তারা বিভিন্ন সময়ে শিবির থেকে বেরিয়ে হামলা করছে। আগামিকাল এ নিয়ে ফের শান্তি বৈঠক হওয়ার কথা।