ফাইল চিত্র।
হাত সাফাই করে বেড়াচ্ছে ‘গুলাবি গ্যাং’!
দিল্লি মেট্রোয় পকেটমারির ৯০ শতাংশই নাকি এই বাহিনীর হাতের কারসাজি! সম্প্রতি এমন তথ্যই সামনে এনে যাত্রীদের সতর্ক করেছে দিল্লি মেট্রোর সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ)।
যাত্রীদের সতর্ক করতে গিয়ে সিআইএসএফ জানিয়েছে, একটি মহিলা পকেটমার দল রয়েছে। যারা মূলত দিল্লির ৮টি স্টেশনে পকেটমারি করে থাকে। কাশ্মীরি গেট, চাঁদনি চক, শাদারা, হুদা সিটি সেন্টার, রাজীব চক, কীর্তি নগর, নিউ দিল্লি এবং তুঘলকাবাদ স্টেশনে ওই দলের সদস্য সংখ্যা নেহাত কম নয়। ৩০ থেকে ৪০ জন রয়েছে এই ‘গুলাবি গ্যাং’-এ।
সিআইএসএফ সূত্রে খবর, শুধুমাত্র ২০১৭ সালে এখনও পর্যন্ত ৩৭৩টি পকেটমারির অভিযোগ হয়েছে। তার মধ্যে ৩২৯টি ঘটনাই ওই মহিলা পকেটমারেরা করেছে। চলতি মাসের ২ জুন ২১ জন মহিলা পকেটমার পাকড়াও করে সিআইএসএফ। পকেটমারির অভিযোগে ৩ এবং ৪ জুন যথাক্রমে ১৫ এবং ১৬ জন মহিলাকে গ্রেফতার করে সিআইএসএফ।
আরও পড়ুন: গরিবের পেট ভরান বাহাত্তুরে ‘রুটিবাবা’
কী ভাবে হাত সাফাই করে তারা?
সিআইএসএফ জানিয়েছে, প্রথমে দল বেঁধে বাচ্চা নিয়ে ভিড় ঠেলে উঠে পড়ে মেট্রোতে। কোনও এক জন যাত্রীকে টার্গেট করে নেন। তার পর সেই যাত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে গ্যাংটি। গ্যাঙের বাচ্চাটির সঙ্গে বন্ধুত্ব করিয়ে দেয় ওই যাত্রীর। শিশুটির সঙ্গে যাত্রীটিকে গল্পে ব্যস্ত করে রাখে এক জন, আর অন্য জন হাত সাফাইয়ের কাজ করে। বাকিরা তখন আড়াল করে রাখে তাদের। মেট্রো পরবর্তী স্টেশনে পৌঁছলে ফের দল বেঁধেই নেমে পড়ে তারা। এর পর পরবর্তী মেট্রোর অপেক্ষা। পরবর্তী ট্রেনে উঠেও একই ভাবে খুব সন্তর্পণে হাত সাফাইয়ের কাজটি সেরে ফেলে তারা। এ ভাবেই নাকি দিল্লি মেট্রোতে জাঁকিয়ে বসেছে ওই মহিলা পকেটমারের দল। দিল্লি মেট্রোতে যে পরিমাণ পকেটমারির অভিযোগ মেলে তার সিংহ ভাগ করে এরাই।
সম্প্রতি তাদের থেকে সাধারণ মানুষকে সতর্কও করেছে সিআইএসএফ। কিন্তু তাতেও খুব একটা কাজ হচ্ছে না। কারণ সিআইএসএফ জানিয়েছে, এরা ধরা পড়লেও খুব তাড়াতাড়ি ছাড়া পেয়ে যায়। তার উপর মেট্রো স্টেশনে ঢোকা থেকে কাউকে বারণ করা যায় না। তাই ছাড়া পেয়েই ফের মেট্রোতে হাত সাফাইয়ের কাজে লেগে পড়ে তারা। তার উপর আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যাত্রীরা পকেটমারির অভিযোগ জানান না।
দিল্লি মেট্রোতে পকেটমারি রুখতে তাই বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে সিআইএসএফ। গড়া হয়েছে ‘অ্যান্টি থেফট্ স্কোয়াড’। প্রায় প্রতিটা স্টেশনেই ছড়িয়ে রয়েছে এই স্কোয়াডের কর্মীরা। দলটি মেট্রো স্টেশনে ঢুকলেই তাদের উপরে নজর রাখতে শুরু করছে ওই স্কোয়াড। সাধারণ পোশাকে তাদের অনুসরণ করতে শুরু করছে স্কোয়াডের মহিলা সিআইএসএফ কর্মীরা। এমনকী, হাতেনাতে ধরার জন্য পিছু নিয়ে মেট্রোতেও উঠে পড়ছে স্কোয়াডের কর্মীরা। পাশাপাশি যাত্রীদের সতর্ক করতে এই ‘গুলাবি গ্যাং’-এর সদস্যদের স্কেচ করানোর কথাও ভাবছে সিআইএসএফ।