প্রতীকী ছবি
শুধু ভিড় নিয়ন্ত্রণ নয়, এ বারেও অন্তত উৎসবের উচ্ছ্বাস থেকে মানুষ দূরে থাকুক। অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ের আবহে এমনটাই মত সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ থেকে চিকিৎসকদের একাংশের। তাঁরা বলছেন, উৎসবের মরসুমের বাঁধ ভাঙা আনন্দ উচ্ছ্বাস, আগামী দিনে বড় বিপদ ডেকে আনার সম্ভাবনাকে একশো শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে। শুধু তাই নয়, বড়দের উচ্ছ্বাসে পরিবারের খুদে সদস্য এমনকী বয়স্কদের বিপদের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না চিকিৎসকেরা।
কারণ হিসেবে তাঁরা জানাচ্ছেন, শিশুদের এখনও টিকাকরণ হয়নি। বলা হচ্ছে তৃতীয় ঢেউতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হতে পারে। সেই পরিস্থিতিতে উৎসবে মেতে ওঠা বড়রা সহজেই ভাইরাসের বাহকের কাজ করতে পারেন। সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায়ের কথায়, ‘‘ভাইরাসের চরিত্র অনুমান করা মুস্কিল। উৎসবের ভিড়ে শহর-জেলার মানুষ একত্রিত হয়ে, বাড়িতে ভাইরাস নিয়ে গিয়ে খুদে সদস্যের ঝুঁকি বাড়াতেই পারেন।’’ শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারে মতে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতেই তৃতীয় ঢেউ আটকানো সম্ভব।
দীপ্তেন্দ্র জানাচ্ছেন, রাজ্যে সেরো পজ়িটিভিটি রেট ৬০ শতাংশ। যতক্ষন না সেটি ৮০ শতাংশ হচ্ছে ততক্ষন হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘শিশুরা গত দেড় বছর ঘরবন্দি। মাঠ, খেলাধূলো ভুলে অনলাইন-ই এখন জগৎ। শিশুদের কষ্টটা উপলদ্ধি করেই এ বারও বড়দের সংযত থাকা উচিত। আবার অতিমারিরতে অনলাইনে সিনেমা দেখার অভ্যাসের মতো এ বছর ভার্চুয়াল মাধ্যমে ঠাকুর দেখার ব্যবস্থা করা যেতেই পারে।’’ শেষ কয়েক দিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, দৈনিক আক্রান্তের হার ওঠানামা করলেও সেটি কিন্তু নামার লক্ষণ নেই।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, টিকার দুটি ডোজ নেওয়া হলেও করোনা আক্রান্ত হবেন না, তেমনটা কোথাও বলা হয়নি। বাড়াবাড়ি হয়ে মৃত্যু না হলেও মৃদু উপসর্গে আক্রান্ত হতেই পারেন। তাই উৎসবে ভিড় এড়ানোর পরমার্শ দিচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দোলুইও। আরও বলছেন, ‘‘উৎসব হোক, নিউ নর্মালে কোভিড বিধি মেনেই। মনে রাখতে হবে ভিড় হলেই সংক্রমণ বাড়বে।”