Durga Puja 2023

থিম পুজো আর সাবেকিয়ানার মিশেল দিল্লির মণ্ডপে

বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে থিমের পুজো করে আসছে মিলনী। এ বছর তাঁদের পুজো ৩২ বছরে পা দিয়েছে। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল কয়েক মাস আগে থেকেই।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১৮
Share:

মিলনী কালচারাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গাপুজো। —নিজস্ব চিত্র।

বাংলার পোড়া মাটির কাজের কদর বিশ্বজুড়ে। বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দির দেখতে ফি বছর ভিড় জমান অসংখ্য মানুষ। এ বার বিষ্ণপুরের সেই টেরাকোটার মন্দির দিল্লির ময়ূর বিহারের ফেজ় ওয়ানের মিলনী কালচারাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন দুর্গা পুজোয়।

Advertisement

বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে থিমের পুজো করে আসছে মিলনী। এ বছর তাঁদের পুজো ৩২ বছরে পা দিয়েছে। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল কয়েক মাস আগে থেকেই। মন্দিরের জন্য আসল টেরাকোটা ব্লকের বরাত যায় বিষ্ণপুরের পাঁচমুড়া গ্রামের শিল্পীদের কাছে। তাই দিয়েই বানানো হয়েছে ওই মণ্ডপ। মণ্ডপ বানানো হয়েছে বিষ্ণপুরের মন্দিরের আদলে। মণ্ডপের দু’পাশে রয়েছে বিষ্ণপুরের বিখ্যাত ঘোড়া। মণ্ডপের ভিতরের দেওয়ালের এক পাশে রয়েছে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের আট ফুট উচ্চতার তৈলচিত্র, উল্টো দিকে রয়েছে চণ্ডী-লক্ষ্মী-সরস্বতীর ছবি। পুজো কমিটির প্রেসিডেন্ট মৃণাল বিশ্বাস জানালেন, ‘‘গোটা প্যান্ডেলটি সাজানো হয়েছে আসল টেরাকোটা ব্লক দিয়ে। সেটাই এ বারের বৈশিষ্ট্য। রাধাকৃষ্ণের রাসলীলা থেকে পৌরাণিক বিভিন্ন দৃশ্যের বর্ণনা যেমন রয়েছে, তেমনই বিষ্ণুর দশাবতার এবং যুগে যুগে বিষ্ণুর সেই অবতারের মাধ্যমে দুষ্টের দমনের বার্তা দেওয়া হয়েছে টেরাকোটার মাধ্যমে। মূর্তি সাবেকি। বিষ্ণপুরের রাজপরিবারে সাতশো বছর আগে মায়ের চণ্ডীরূপে পুজো করা হত। মণ্ডপের থিমের সঙ্গে সঙ্গত করতে সেই মূর্তিকেই বেছে নিয়েছে পুজো কমিটি।’’

ময়ূর বিহারের ফেজ়-থ্রি দুর্গাপুজো কমিটি এ বার ৩১তম বছরে পা দিয়েছে। পুজো কমিটির এ বারের থিম হল কেদারনাথ মন্দির। কেদারনাথের গর্ভগৃহের আদলে বানানো মঞ্চে বসানো হয়েছে মা দুর্গাকে। উদ্যোক্তাদের কথায়, মন্দিরের থিম যে-হেতু কেদারনাথ, তাই মায়ের শিবানী রূপকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে মানানসই আলোর খেলা। যা অবশ্যই দর্শকদের আকৃষ্ট করবে। প্রতি সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা। তাতে স্থানীয় বাঙালিরা যেমন অংশ নেন, তেমনি শিল্পী আসেন কলকাতা থেকেও। সপ্তমী থেকে থাকে ভোগ-প্রসাদের ব্যবস্থাও।

Advertisement

নয়ডার সেক্টর-৬১-এর বলাকা দুর্গোৎসব কমিটি এ বার ১৬তম বর্ষে পা দিয়েছে। মন্দিরের আদলে চল্লিশ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ বানানো হয়েছে। পুজো কমিটির থিম হল সোনার বাংলা। কী কারণগুলির জন্য বাংলাকে অতীতে সোনার বাংলা বলা হত সেই বিষয়গুলিকে বিশদে মণ্ডপের মধ্যে তুলে ধরেছে পুজো কমিটি। লক্ষ্য দিল্লি ও সংলগ্ন জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের মানুষের কাছে বাংলার অতীত গৌরবকে তুলে ধরা। ঘরোয়া পরিবেশে হওয়া ওই পুজো দেখতে ভিড় জমান নয়ডার বাঙালিদের বড় অংশ। প্রতি বছরের মতো এ বারও পুজোয় মেতে উঠেছেন দিল্লির লক্ষ্মীবাই নগরের শিবশক্তি মন্দির দুর্গা পুজো সমিতি। এ বছর ৬৮ বছরে পা দিয়েছে ওই পুজো। পুজো কমিটির সাংগঠনিক সেক্রেটারি প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত বলেন, ‘‘সাবেকিয়ানা এই পুজোর বৈশিষ্ট্য। প্রতিমাও চিরাচরিত। এ যাত্রায় মায়ের সাজ এসেছে কুমোরটুলি থেকে। এ বার গোটা মণ্ডপ ও মণ্ডপের প্রবেশদ্বার বানানো হয়েছে থার্মোকল দিয়ে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে শিল্পীরা এসে ওই অভিনব কাজ করেছেন। পুজোর কয়েক দিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। শিল্পী আসেন মুম্বই থেকেও। দিল্লির অন্যতম পুরনো এই পুজোয় বাঙালিদের সঙ্গে ভিড় জমান স্থানীয় অবাঙিলারাও।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement