ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার সকাল থেকে নতুন করে শুরু হয়েছিল উদ্ধারকাজ। গত ১৫ দিন ধরে উত্তরকাশীর ধসে পড়া সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার যা যা চেষ্টা হয়েছে, তার সবটুকু ফেলে আবার নতুন প্রক্রিয়ায় শুরু হয় সুড়ঙ্গে প্রবেশের চেষ্টা। সিল্কিয়ারা টানেলে ঢোকার দ্বিতীয় পর্ব। দিন ভর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর অবশেষে রাতে সেই উদ্ধারকাজে বিরতি নিলেন উদ্ধারকারীরা। জানা গেল, প্রথম দিনে প্রায় ২০ মিটার গভীরে পৌঁছতে পেরেছে পাহাড় খোঁড়ার যন্ত্র। তবে এখনও অনেকটাই কাজ বাকি।
এতদিন মাটির সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে সুড়ঙ্গের মূল প্রবেশ পথ দিয়েই ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। রবিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে উলম্ব ভাবে পাহাড় খুঁড়ে সুড়ঙ্গের উপর থেকে নীচে নামার প্রক্রিয়া। সেই কাজে লাগানো হয়েছে নতুন ড্রিলিং মেশিন। নতুন উদ্ধারকারী দল। রবিবার রাতে প্রথম দিনের কাজ শেষ করার পর জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, প্রথম দিনে ১৯.২ মিটার পর্যন্ত গভীরে পৌঁছতে পেরেছে তারা। তবে লক্ষ্য এখনও অনেক দূর। আগামী চার দিনে ৮৬ মিটার পর্যন্ত গভীরে পৌঁছনোর লক্ষ্য রয়েছে তাদের। সেটা যথা সময়ে সম্ভব হয় কি না আপাতত সেটাই দেখার।
আপাতত দু’ভাবেই সুড়ঙ্গে ঢোকার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছে এনডিএমএ। পাহাড়ের উপর থেকে সুড়ঙ্গে নামার চেষ্টার পাশাপাশি কাজ চলবে মূল রাস্তাটিতেও। যে পথ আপাতত আমেরিকার অগার মেশিনের দৌলতে পুরোপুরি বন্ধ। সেটিকে সরিয়ে ওই রাস্তায় মেশিন ছাড়া উদ্ধারকাজ চালাবে সেনাবাহিনী।
শনিবারই উত্তরকাশী থেকে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছিলেন, ওই অগার মেশিন খারাপ হয়ে যাওয়ার কথা। আমেরিকায় তৈরি ওই ড্রিলিং মেশিনটির ব্লেড আটকে গিয়েছিল পাহাড়ের ভিতরে থাকা সুড়ঙ্গের কোনও ধাতব জালে। তার পর থেকে পুরোপুরি থমকে যায় উদ্ধার কাজ। আন্তর্জাতিক সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিক্সও জানিয়ে দেন, মেশিনটি বিগড়ে যাওয়ার কথা। তিনি বলেন, এতে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে বার করে আনার প্রক্রিয়াটি আরও বিলম্বিত হল। এই পরিস্থিতিতেই রবিবার সকাল থেকে অগার মেশিনটির ব্লেড কেটে সেটি বার করে আনার কাজ শুরু করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। আটকে যাওয়া ব্লেড কেটে মেশিনটিকে সরানোর জন্য প্লাজমা কাটার নিয়ে আসা হয়েছে হায়দরাবাদ থেকে। রবিবার রাতের মধ্যেই ২৫ টন ওজনের ওই অগার মেশিনটিকে টানেলের এসকেপ পাইপ থেকে বার করে আনার প্রক্রিয়া অনেকটা এগোনোর কথা ছিল সেনাবাহিনী। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অগার মেশিন সরানোর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। টানেল থেকে সেটি বার করে আনার পরই ওই পথে প্রায় ১০ মিটার বিনা যন্ত্রে খনন করার কাজ শুরু হবে। সেই কাজ করবে ভারতীয় সেনা। পাশাপাশি চলবে উলম্ব খনন প্রক্রিয়াটিও।
তবে সোমবার থেকে এই কাজে বাড়তি সমস্যা তৈরি করতে পারে আবহাওয়া। উত্তরাখণ্ডের এই এলাকায় মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টি এবং তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বৃষ্টি হলে সেই উদ্ধার কাজ ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছেন উদ্ধারকারীরা। সেই সঙ্গে বাড়বে ঝুঁকিও।