—ফাইল চিত্র।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে দক্ষতাভিত্তিক কোর্স চালু করার বিষয়ে খসড়া প্রকাশ করেছে ইউজিসি। এ বিষয়ে ইউজিসি-র চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমার জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের চাকরি ক্ষেত্রে যোগ্য করে তুলতে শিক্ষাগত জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক এবং শিল্পক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। কিন্তু এ ধরনের কোর্স চালু নিয়ে শিক্ষা মহলে নানা প্রশ্নও উঠেছে।
জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারী এই গাইডলাইনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডেটা অ্যানালিটিক্স, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মতো বিষয় চালুর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রথাগত কোর্সের পাশাপাশি এ ধরনের ছোট কোর্স পড়ুয়ারা করতে পারবেন। অনলাইন অথবা হাইব্রিড পদ্ধতিতে কোর্সগুলি করা যাবে। উচ্চশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলিকে এই খসড়া নিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে মতামত জানাতে বলা হয়েছে। খসড়ায় জানানো হয়েছে, এই কোর্স চালাতে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যের শিল্প সংস্থা, শিল্প সংগঠন, টেকনোলজি পার্কের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির যা আর্থিক অবস্থা, তাতে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে ইউজিসি যে নানা বিষয়ে একের পর এক নির্দেশ দিয়ে চলেছে, তা বাস্তবায়িত হবে কী ভাবে? শিক্ষক মহলের একাংশের মতে, এই ধরনের কোর্সের জন্য অর্থ প্রয়োজন। অথচ কেন্দ্র এবং রাজ্য—দু’ দিক থেকেই আর্থিক সাহায্য কমেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক এবং পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “ইউজিসি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে আর্থিক সাহায্য না করে নিত্যনতুন নির্দেশ প্রকাশ করে যাচ্ছে। সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাস্তবতা বোঝার চেষ্টাই করা হচ্ছে না। এমনিতেই সাধারণ ডিগ্রি কোর্সে ক্রমশ পড়ুয়া কমছে। তার উপরে যথাযথ পরিকল্পনা এবং আর্থিক সাহায্য ছাড়া এত কিছু চালু করা অসম্ভব।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক এবং ইলেকট্রনিক সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক সনাতন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ইউজিসির নির্দেশাবলী দেখে মনে হচ্ছে, এখন ভারতবর্ষের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির একমাত্র কর্তব্য শিল্প-কারখানার জন্য শ্রমিক সরবরাহ করা। গবেষণা করার প্রয়োজন নেই! এরাই আবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে স্বনির্ভর দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখে!” তিনি আরও বলেন, “শিল্পক্ষেত্র এই বিষয়ে আর্থিক সাহায্য করুক। আসলে নতুন পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণের খরচও তারা বহন করতে চায় না। সরকার এই চাহিদায় সিলমোহর দিচ্ছে।”