ফাইল চিত্র।
বঙ্গভাষীদের সঙ্গে ব্যবধান তৈরি করে অসমের পাঁচটি জনগোষ্ঠীকে অসমিয়া খিলঞ্জিয়া (ভূমিপুত্র) মুসলিম বলে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা৷ ওই জনগোষ্ঠীগুলি হল গরিয়া, মরিয়া, দেশি, জলাহ (চা শ্রমিক) এবং সৈয়দ৷ মঙ্গলবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে পর্যটন মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়া বলেন, ‘‘সাতটি উপসমিতির রিপোর্ট পেয়ে সরকার এ ব্যাপারে মনস্থির করে৷’’
গড়িয়া মরিয়া দেশি জাতীয় পরিষদ বিলাসীপাড়ায় শোভাযাত্রা বার করে৷ তারা একে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার প্রশংসা করে৷ আবার খিলঞ্জিয়া মুসলমানের স্বীকৃতি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্নও উঠেছে৷ তাদের বক্তব্য, এখনও খিলঞ্জিয়ার সংজ্ঞা নিরূপণ হয়নি৷ ঝুলে আছে অসমিয়ার সংজ্ঞা নিরূপণের ব্যাপারটিও৷ তার আগে মন্ত্রিসভার এমন সিদ্ধান্তকে অর্থহীন বলেই করেছে ইউডিএফ৷ তাদের দাবি, বিভাজনের ষড়যন্ত্রে সরকার এমন এক সিদ্ধান্ত নিল৷ সমালোচনায় মুখর তৃণমূলও৷ দলের মিডিয়া সেলের প্রধান দিলীপ শর্মার প্রশ্ন, এত দিন কি এঁরা তা হলে খিলঞ্জিয়া ছিলেন না? থাকলে নতুন করে ঘোষণা কেন? তিনি বলেন, ‘‘গত বাজেটে হিমন্ত সরকার খিলঞ্জিয়া মুসলমানদের জন্য নিগম, পরিষদ ইত্যাদি গঠনের ঘোষণা করেছিল৷ একশো কোটি টাকা দেওয়ার কথাও শুনিয়েছিল৷’’
মুখ্যমন্ত্রী বুধবার বলেন, ‘‘মুসলিমদের এক অংশ এখানকার মাটির সঙ্গে আগে থেকে জড়িত৷ তাঁরা নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিচিতি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করছেন৷’’ খিলঞ্জিয়ার সংজ্ঞা বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রীর জবাব, ‘‘একশো বছর ধরে কারা অসমে রয়েছেন, এটা জানার জন্য কোনও সংজ্ঞার প্রয়োজন হয় না৷’’ এ দিকে মঙ্গলবারের সিদ্ধান্তে বাঙালিপ্রধান বরাক উপত্যকাতেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে৷ কারণ ওই পাঁচ জনগোষ্ঠীর কেউ বরাক উপত্যকায় নেই৷ এখানকার বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রশ্ন, লস্কর, বড়ভুঁইয়া, চৌধুরী ইত্যাদি বিভিন্ন উপাধি এখানকার ডিমাসা রাজাদের দেওয়া৷ ব্রিটিশ শাসনের আগে থেকে বরাকে বসবাসকারীরা কি ভূমিপুত্র নন, জানতে চান তাঁরা৷