ভারত সফর স্থগিত রাখলেন শিনজো আবে। —ফাইল চিত্র।
পূ্র্ব এশিয়ায় চিনের প্রভাব রুখতে বরাবরই একে অপরকে পাশে পেয়েছে ভারত ও জাপান। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে গত ২০১৭-থেকে বার্ষিক বৈঠক হয়ে আসছে। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তেজনার আবহে এ বছর তা আটকে গেল। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে শেষ মুহূর্তে ভারত সফর স্থগিত করে দেওয়ায়, এখন ওই বৈঠক নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
প্রথমে জাপানের একটি সংবাদ সংস্থার সূত্রে খবর মেলে শিনজো আবের সফর অনিশ্চিত। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানায়, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে এবং পরে উপযুক্ত সময় বুঝে ফের বৈঠক হবে।
তবে ভারতের তরফে এমন যুক্তি দেওয়া হলেও, জাপান সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। আর তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। সূত্রের খবর, নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি অসমে। বিমান পরিষেবা বিপর্যস্ত। তার জেরে বৈঠকের জায়গা, হোটেল এবং নিরপত্তা সংক্রান্ত ব্যবস্থা তদারকি করে দেখা তো দূর, বৈঠকের দু’দিন আগে পর্যন্ত অসমে পা-ও রাখতে পারেনি জাপানের প্রতিনিধি দল। আবার এত অল্প সময়ের মধ্যে বৈঠক দিল্লিতে স্থানান্তরিত করাও সম্ভব ছিল না। তাই ভেবেচিন্তেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালে ভারত ও জাপানের মধ্যে বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল উত্তর-পূর্ব ভারতে অর্থনৈতিক আধুনিকীকরণ। যোগাযোগ, পরিকাঠামো এবং শিল্পক্ষেত্রে উন্নয়নের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক আরও নিবিড় করে তোলার সংকল্প নেওয়া হয় সেখানে।
উত্তর-পূর্বের প্রাণকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত যে গুয়াহাটিকে কেন্দ্র করে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, এই মুহূর্তে সেখানে আগুন জ্বলছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে বৈঠক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়। এর পরে বৈঠক কবে হবে, তা অসম থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হবে কি না, তা নিয়েও দু’পক্ষের কেউই এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি।