সংসদ। —ফাইল চিত্র।
এ বারের অধিবেশনে সংসদের বাইরে এবং ভিতরে বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র সদস্যদের এত মসৃণ সমন্বয় সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। তার প্রধান কারণ, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের বিবাদহীন বোঝাপড়া হয়েছে এ বার। অ্যালার্জির চিহ্নও দেখা যায়নি। সাম্প্রতিক সময়ে যা একান্তই বিরল। আজ লোকসভা অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর কথা হয়। সূত্রের খবর, রাহুল আজ সুদীপকে বলেছেন সংসদ অধিবেশন শেষ হয়ে যাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু নিজেদের মধ্যে আগামী দিনে কথাবার্তা ও সমন্বয় চালিয়ে যেতে হবে। সুদীপও সহমত হয়েছেন।
ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে একমাত্র তৃণমূলের সঙ্গেই কোনও রাজ্যে জোট নেই কংগ্রেসের। বরং তিক্ত লড়াই হয়েছে চব্বিশের লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গে। এই দুই দলের মধ্যে টানাপড়েনের ফলে বিরোধী জোটের মধ্যেই একটি ‘জিঞ্জার’ গোষ্ঠীও উঁকি মেরেছিল। তৃণমূল শীর্ষ নেতারা আলাদা করে শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে, অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক ও আলাপচারিতা করে আঞ্চলিক রাজনৈতিক ঐক্যের পতাকা উড়িয়েছিলেন।
আজ তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “কংগ্রেস এত দিনে বুঝতে পেরেছে যে, আমরা ওদের কার্বন কপি নই। আমাদের সঙ্গে মর্যাদা দিয়ে কথা বলতে হবে। রাজ্যে
কংগ্রেস, বাম এবং বিজেপির সঙ্গে লড়াই করে তৃণমূল ২৯টি আসন জিতে এসেছে।” তাঁর কথায়, “এ বারে কোনও দলই বাড়তি কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেনি। প্রত্যেকে একত্রে ধর্না এবং আন্দোলন করেছে।” কংগ্রেসের তোলা বিষয়ে গলা মিলিয়ে প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল।
আবার তৃণমূলের পরামর্শ মেনে বেশ কিছু পদক্ষেপও করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহার করার দাবি সংসদে প্রথম আনে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে। তার পর এই দাবিতে গলা মেলায় কংগ্রেস। একই ভাবে বিনেশ ফোগতের প্রতি অবিচারের দাবিতে একসুর দেখা গিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, এসপি-সহ সব বিরোধী দলের সাংসদদের। খাদ্যপণ্য নিয়ে প্রতিবাদেও দেখা গিয়েছে একই চিত্র।