Bihar Election 2020

পটনায় কি পট বদল, জোর চর্চা এ রাজ্যে

পটনায় কি পট-পরিবর্তন হচ্ছে, বাংলার বিজেপি নেতাদের মধ্যে আলোচনায় এখন বারে বারেই ঘুরেফিরে আসছে এই প্রশ্ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৪৬
Share:

বিহারের মাঞ্ঝা এলাকায় বেলুন দিয়ে সাজানো ভোটের বুথ। নিজস্ব চিত্র

বিহারের ভোটে হারলে কি বাংলার ভোটের আগে বিজেপির মনোবল ধাক্কা খাবে! নাকি আরও মরিয়া হয়ে বিহারের পাশের রাজ্য বাংলায় ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নামবে বিজেপি! তার জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে ভোটের পথে যাবে!

Advertisement

পটনায় কি পট-পরিবর্তন হচ্ছে, বাংলার বিজেপি নেতাদের মধ্যে আলোচনায় এখন বারে বারেই ঘুরেফিরে আসছে এই প্রশ্ন। তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্বও বিজেপির মতো বিহারের ভোটের ফল কী হয়, তার জন্য অপেক্ষা করছেন। তৃতীয় একটি শিবিরও বিহারের ভোটের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তাঁরা হলেন, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির দিকে পা বাড়ানো নেতারা। তৃণমূলের এই ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতাদের ঘনিষ্ঠ শিবির সূত্রের খবর, তাঁরাও বিহারের ভোটের ফল দেখে বিজেপির পালের হাওয়া মেপে নিতে চাইছেন। তাঁরাও বিহারের ভোটের ফলের দিকে চোখ রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার বিহারে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের দিনে দাবি করেছেন, বিহারের মানুষ ‘ডাবল ইঞ্জিনের সরকার’-কে ফের ক্ষমতায় ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। মোদীর ভবিষ্যৎবাণী ফলবে কি না, তা ১০ তারিখ ফল ঘোষণার পরেই জানা যাবে। তবে অমিত শাহের বিশেষ নজর বাংলায়। কোভিড সামলে বিহারের ভোটে এক বারও প্রচারে যাননি তিনি। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে যাবেন, দলের মনোবল বাড়াতে। বাংলার তৃণমূল ও বিজেপি, দুই দলের নেতারাই একটি বিষয়ে একমত।

Advertisement

তা হল, বাংলার ভোটের ছয় মাসও বাকি নেই। তার আগে বিজেপি বিহারের ভোটে জিতলে অবশ্যই বাংলায় বাড়তি মনোবল পেয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: ‘উইপোকা’ বাংলাদেশ অর্থনীতিতে টপকাচ্ছে ভারতকে! বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘ক্ষণস্থায়ী’

কিন্তু ভোটে হারলে?

তৃণমূল শিবির মনে করছে, বিজেপি অবশ্যই ধাক্কা খাবে। প্রমাণ হয়ে যাবে, ২০১৯-এর ভোটে যা-ই হোক, বিধানসভা ভোটে মোদী-ম্যাজিক বা মোদী-ঝড় কাজ করে না। তৃণমূলেরই আর একটি শিবিরের আশঙ্কা, বিজেপি বিহারে হেরে গেলে বিজেপি নিজের সম্মান রক্ষার্থে বাংলার ভোটে আরও মরিয়া হয়ে ঝাঁপাতে পারে। কারণ, বিহার হাতছাড়া হলে বাংলা, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড মিলিয়ে প্রায় পূর্ব ভারতই বিজেপির হাতছাড়া হবে।

রাজনীতিকদের একাংশের অনুমান, বিহারে হেরে গেলে বিজেপি আরও মরিয়া হয়ে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির মতো চরম পদক্ষেপ করতে পারে। বারবার আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কথা বলে, দিল্লি গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যপাল তারই প্রেক্ষাপট তৈরি করে রাখছেন। তৃণমূলের মতো বঙ্গ বিজেপির অনেক নেতারও আশঙ্কা, রাষ্ট্রপতি শাসনে আখেরে তৃণমূলই লাভবান হবে। সিপিএম, প্রদেশ কংগ্রেসও মমতার বিরুদ্ধে হলেও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে নয়।

আর বিজেপি জিতলে? তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার যুক্তি, ‘‘২০১৯-এ লোকসভায় ৩০৩ আসনে জিতে আসার পরে বিজেপি দিল্লিতে গোহারা হেরেছে। ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতা হারিয়েছে। বিহারে ভোটে জিতলে অবশ্যই বাংলার ভোটের আগে তারা মনোবল পেয়ে যাবে। আমাদের দলের শুভেন্দু অধিকারীর মতো যে সব নেতা এখনও দলে থাকবেন, নাকি বিজেপিতে যোগ দেবেন, তা নিয়ে দোনামনা করছেন, তাঁরাও বিহারের ভোটের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।’’ তৃণমূল সূত্র বলছে, শুভেন্দুর মতো নেতারা যেমন দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন, তেমনই তাঁদের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের কথা বলার দরজাও বন্ধ হয়ে যায়নি। সে ক্ষেত্রে বিহারের ফল অনেক সম্ভাবনাই তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতায় এলে বিকাশ দুবে করে ছাড়ব’, হুমকি সায়ন্তনের​

নির্বাচনী পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ ও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মোদী-ঝড়ে বিরোধী শিবির উড়ে গেলেও কোনও বিধানসভা ভোটেই বিজেপি সেই ঝড় তুলতে পারেনি। ব্যতিক্রম উত্তরপ্রদেশ। এমনকি মোদী, অমিত শাহের নিজের রাজ্য গুজরাতেও ক্ষমতায় ফিরতে বিজেপিকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘এ কথা ঠিক, বিধানসভা ভোটে রাজ্যের নিজস্ব ভোটই প্রধান হয়ে উঠছে। কিন্তু বিহারে আমরা শুধু নীতীশ কুমার সরকারের কাজ দেখিয়ে ভোট চাইছি না। মোদী সরকারের কাজের নিরিখেও ভোট চাওয়া হচ্ছে। বাংলাতেও মোদী সরকারের উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার জন্যই ভোট চাইবে বিজেপি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement