Rahul Gandhi

হার নিশ্চিত জেনেও স্পিকার পদে লড়তে তৎপরতা বিরোধী শিবিরে

অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে চলতি মাসের ২৪ তারিখ। প্রথম দু’দিন জয়ী প্রার্থীদের সাংসদ হিসেবে শপথগ্রহণের পরে ২৬ জুন স্পিকার পদে নির্বাচন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪ ০৬:২৩
Share:

রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

লোকসভার স্পিকার পদের জন্য বিজেপি তথা এনডিএ-র প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ প্রার্থী দিতে পারে। এ নিয়ে ‘ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, লোকসভায় এনডিএ-র সাংসদ সংখ্যা বেশি। ফলে আপাত ভাবে বিজেপির প্রার্থীই স্পিকার নির্বাচনে জিতবেন। তা সত্ত্বেও ‘ইন্ডিয়া’ প্রার্থী দিলে বিরোধীরা যে সংসদের নিম্নকক্ষে শাসক শিবিরকে বিনাযুদ্ধে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না, সেই বার্তা দেওয়া হবে।

Advertisement

অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে চলতি মাসের ২৪ তারিখ। প্রথম দু’দিন জয়ী প্রার্থীদের সাংসদ হিসেবে শপথগ্রহণের পরে ২৬ জুন স্পিকার পদে নির্বাচন। ২৭ জুন রাষ্ট্রপতি লোকসভা ও রাজ্যসভার যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা দেবেন। সে দিন থেকেই রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হবে। সংসদের অধিবেশন চলবে ৩ জুলাই পর্যন্ত। এনডিএ সরকারে বিজেপির সবচেয়ে বড় শরিক চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এত দিন লোকসভার স্পিকারের পদের দাবি করছিল। কিন্তু বিজেপি চন্দ্রবাবুর দাবিকে সামাল দিয়েছে স্পিকারের পদের বদলে অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য কেন্দ্রীয় সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু ‘ইন্ডিয়া’র তরফে তাঁকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, বিজেপি রাজি না হলেও তিনি স্পিকার পদের জন্য প্রার্থী দিন। ‘ইন্ডিয়া’ তাঁর প্রার্থীকে সমর্থন করবে। ‘ইন্ডিয়া’র হয়ে শরদ পওয়ার বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন চন্দ্রবাবুকে। যুক্তি ছিল, বিজেপি ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে সরকার চালাবে না। অবশ্যই সংখ্যা বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা করবে। টিডিপি-র হাতে স্পিকারের পদটি থাকলে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের পক্ষে দল ভাঙানো সহজ হবে না। উদ্ধবপন্থী শিবসেনার নেতা আদিত্য ঠাকরেও একই বার্তা দিয়েছেন। গত লোকসভায় বিরোধী শিবিরের ১৫০ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করার ঘটনা মনে করিয়ে আম আদমি
পার্টির সঞ্জয় সিংহ বলেন, ফের বিজেপির কেউ স্পিকার হলে তা বিপজ্জনক হবে। গত পাঁচ বছর সংবিধানের খেলাপ করে বিজেপি কাউকে ডেপুটি স্পিকারও করেনি।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, চন্দ্রবাবু রাজি না হলে হার নিশ্চিত জেনেও ‘ইন্ডিয়া’ নিজেদের প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করছে। কারণ এনডিএ-র সদস্য সংখ্যা ২৯৩ জন। ‘ইন্ডিয়া’র সদস্য সংখ্যা ২৩৪ জন ছিল। তিন জন নির্দল সাংসদ কংগ্রেসকে সমর্থন করায় ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদ সংখ্যা বেড়ে ২৩৭ হয়েছে। তার পরেও অনেক পিছিয়ে বিরোধী জোট। তৃণমূলের আজ আজ জানানো হয়েছে, বাংলার বাইরের ছোট দলের দু’জন সাংসদ তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন। সূত্রের খবর, এঁরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাংসদ। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, স্পিকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘ইন্ডিয়া’র মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সমন্বয় চলছে। এ ব্যাপারে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হবে। সূত্রের খবর বিরোধীরা কংগ্রেসকেই প্রার্থী দিতে বলছে। বিরোধী শিবিরের এক নেতা বলেন, ‘‘এটা জেতা-হারার নয়, প্রতীকী লড়াই। যেমনটা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হয়ে থাকে।’

Advertisement

বিজেপি টিডিপি-কে রাজি করাতে অন্ধ্রের বিজেপি সভানেত্রী ডি পুরন্দেশ্বরীকে স্পিকার করার প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি চন্দ্রবাবুর শ্যালিকা। চন্দ্রবাবুকে বোঝানো হচ্ছে, তেলুগু দেশমের না হলেও অন্ধ্রের ও তাঁর পরিবারের সদস্যকেই স্পিকার করা হচ্ছে। বিজেপির একাংশ মনে করছেন, ওম বিড়লাকেই ফের লোকসভার স্পিকার করা হতে পারে। সাধারণত যাঁরা লোকসভার স্পিকার হন, হয় তাঁরা পরের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না বা ভোটে হেরে যান। ২০ বছর পরে সেই গেরো কাটিয়ে ওম বিড়লা এ বারের ভোটে ফের রাজস্থানের কোটা থেকে জিতে এসেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement